পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

494 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক স্বাধীন পূর্ব | পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ১১ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭০ বাংলা প্রতিষ্ঠার ১১-দফা কর্মসূচী স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার ১১-দফা কর্মসূচী দুটি কথা পূর্ব-বাংলার জনগণের উপর সাম্রাজ্যবাদী শোষণ আমলা মুৎসুদি পুঁজির শোষণ ও সামন্তবাদী শোষণ। পূর্ব বাংলার জনগণের শতকরা ৮৫ জন কৃষক যেহেতু তারা সামন্তবাদী শোষণের জর্জরিত-যেহেতু পূর্ব বাংলার জনগণের সাথে সামন্তবাদী শোষণের দ্বন্দ্ব প্রধান। যদিও এই কর্মসূচী পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কর্তৃক প্রচারিত হচ্চে তবুও ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ এই কর্মসূচী বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয়-এই কর্মসূচীর বাস্তবায়ন হতে পারে একমাত্র শ্রমিক শ্রেণীর আদর্শনিষ্ঠ বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে শ্রমিক, ভূমিহীন কৃষক, গরীব ও মাঝারী কৃষককে সংগঠিত কর বিপ্লবী, বুদ্ধিজীবী, শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতিসেবী, ছোট-মাঝারী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে মুক্তি ফ্রন্ট গঠন করার মধ্য দিয়ে, গ্রাম অঞ্চলে শ্রেণী সংগ্রাম তীব্রতর করে, শ্রেণী সংঘর্ষের রুপান্তরিত করে দীর্ঘ দিয়েই স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ছাত্রসমাজ জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কায়েমের জন্য সহায়কের ভূমিকা পালন করতে সক্ষম-যদি ছাত্রসমাজ নিজেদের আরাম, আয়েশ, ভোগ-বিলাস শ্রেণীচু্যত হয়ে পূর্ব বাংলার জনগনের শ্রেণী শত্রকে খতম করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করে। সাম্রাজ্যবাদ বিশেষতঃ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির (যাহার চরিত্র আমলা মুৎসুদ্দি) এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উচ্ছেদ সাধন করিয়া পূর্ব বাংলায় স্বাধীন সার্বভৌম জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েম করা। এই ব্যবস্থায় পূর্ব বাংলার দেশরক্ষা অর্থনীতি, শাসন ব্যবস্থা, সংস্কৃতি তথা সর্বময় কর্তৃক পূর্ব ংলার জনগণের হাতে থাকিবে। সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও বৃহৎ পুঁজির জাতীয় নিপীড়ন ও শ্রেণী শোষনের কবলমুক্ত এই ব্যবস্থায় জনগণের নিরঙ্কুশ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হইবে ও জনতার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হইবে। ২। (ক) আঠারো ও তদউর্ধ বয়স্ক-বয়স্কা নর-নারীর ভোট ও প্রত্যক্ষ নির্বাচনের ভিত্তিতে জনগণ পরিষদ নির্বাচিত হইবে। কোন নির্বাচনী এলাকার জনগণ ইচ্ছা করিলে যে কোন সময় তাদের প্রতিনিধি প্রত্যাহার করিতে পরিবে। (খ) জনতার গণতান্ত্রিক অধিকার নিরঙ্কুশ করিবার জন্য সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ, ও বৃহৎ পুজির দালাল ও সমর্থক যে কোন শ্রেণী ও ব্যক্তিকে ভোটাধিকার হইতে বঞ্চিত করা হইবে। ৩। (ক) হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী জাতি-উপজাতি বর্ণ নির্বিশেষে সকল (খ) নারী জাতির সমান অধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হইবে। (গ) জনগণের সকল প্রকার মৌলিক অধিকার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও মতাদর্শের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হইবে।