পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ নবম খন্ড

অনেকখানি সাহায্য করেছে (পৃঃ ৩৮৬-৪৪৮)। সমগ্র দেশ দখলদার বাহিনী কবলিত থাকায় এ ব্যাপারে পার্শ্ববর্তী মিত্ররাষ্ট্র ভারতে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকা থেকেই সাহায্য নেওয়া হয়েছে বেশী। মুক্তাঞ্চল থেকে প্রকাশিত দু’একটি পত্রিকার খবরও নেওয়া হয়েছে (পৃঃ ৩৮৬, ৪৩১, ৪৩৪, ৪৪৬, ৪৪৮)। তবে বেংগল রেজিমেণ্ট, ই-পি-আর-এর অধিনায়ক পর্যায়ের মূল ব্যক্তিবর্গের প্রদত্ত সাক্ষাৎকারগুলিই এ খণ্ডের সারবস্তুরূপে কাজ করেছে।

 সাক্ষাৎকারগুলির অধিকাংশ গৃহীত হয়েছিল বাংলা একাডেমীর অঙ্গীভূত জাতীয় স্বাধীনতার ইতিহাস পরিষদের উদ্যোগে। ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ, মেজর জেনারেল (অবঃ) কে. এম শফিউল্লাহর সাক্ষাৎকার দু’টিসহ (পৃৎ ৯৬-১২৮, ১৬০-১৮৪) বেশ কয়েকটি মূল্যবান সাক্ষাৎকার বাংলা একাডেমীর গবেষক সুকুমার বিশ্বাস ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেছিলেন।

 সংগৃহীত সাক্ষাৎকারগুলিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রতিরোধের বিবরণপূর্ণ প্রথমাংশ সশস্ত্র সংগ্রাম (১)-এ এবং প্রতিরোধের পর কেন্দ্রীয় কমাণ্ডের অধীনে বিভিন্ন সেক্টরে সংঘটিত যুদ্ধের বিবরণ সাধারণতঃ সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয়াংশে এসেছে। যেখান থেকে প্রতিরোধ পরবর্তী সংগঠিত যুদ্ধের কথা শুরু হয়েছে, সেখানকার অংশগুলি ষশস্ত্র সংগ্রাম (২)-এ সন্নিবেশিত হয়েছে। এভাবে বাংলাদেশের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিরোধ ও সংগঠিত প্রত্যাঘাত পর্বের যুদ্ধের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

 গ্রন্থের সবশেষে স্বতন্ত্র অধ্যায়ে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কতিপয় গেরিলা বা গণবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের বিবরণ (পৃঃ ৪৫০-৪৯৫)। প্রাথমিক পর্বে প্রতিপক্ষের উন্নততর আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের মুখে প্রাথাগত পদ্ধতির সম্মুখযুদ্ধমূলক প্রতিরোধ ভেঙে পড়লে যুদ্ধ ক্রমশঃ গেরিলা রণকৌশলের দিকে মোড় নেয়। এই অবস্থায় নিয়মিত বাহিনীর যুদ্ধের কৌশল হিসাবে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক গেরিলা বাহিনী গড়ে ওঠে। অনেক স্থানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় অবস্থার ওপর ভিত্তি করেও অনেক গেরিলা দলের সৃষ্টি হয়। তাদের ক্ষিপ্র তৎপরতা, সাহস ও আত্মত্যাগ স্বাধীনতা যুদ্ধকে সাফল্যজনক যৌক্তিক পরিণতিতে পৌঁছাতে বিপুলভাবে সহায়তা করেছিল। গেরিলা বাহিনীগুলির কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের গোটা রণাংগন জুড়ে এতই ব্যাপক ও বিচিত্র ছিল যে, তা স্বতন্ত্র খণ্ডে সন্নিবেশিত হওয়ার দাবী রাখে। কিন্তু এ ব্যাপারে তথ্যের নিদারুন স্বল্পতার কারণে (যেহেতু গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের দৈনন্দিন তৎপরতার লিখিত বিবরণ বেশি পাওয়া যায়নি) তাদের মাত্র কয়েকটি বাহিনীর তৎপরতাসমূহের প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র এখানে তুলে ধরা সম্ভবপর হয়েছে।