পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (নবম খণ্ড).pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : নবম খণ্ড
১৮৪

ঐ হুকুম অনুযায়ী আনুমানিক বিকাল ৩টা থেকে ৪টার কোন সময় ব্রিগেডিয়ার মজুমদারের সংগে জয়দেবপুরে যাই এবং ব্যাটালিয়নের সংগে পরিচিত হই এবং দায়িত্বভার গ্রহণ করি। ঐসময় ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন কোম্পানী এবং প্লাটুনের অবস্থান নিম্নরূপ ছিলঃ


(১) এক কোম্পানী ময়মনসিংহে-কোম্পানী কমাণ্ডার মেজর নুরুল ইসলাম (পরে মেজর জেনারেল এবং অবসরপ্রাপ্ত)।

(২) এক কোম্পানী টাঙ্গাইলে কোম্পানী কমাণ্ডার মেজর কাজেম কামাল, অবাঙ্গালী।

(৩) এক প্লাটুন রাজেন্দ্রপুর এমুনিশন ডিপোতে-গার্ড হিসাবে।

(৪) এক প্লাটুন গাজীপুরে অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরীতে-গার্ড বা প্রহরী হিসাবে।

(৫) ব্যাটালিয়নের অবশিষ্টাংশ জয়দেবপুরে। ঐ সময় জয়দেবপুরে নিম্নোক্ত অফিসারদেরকে পাইঃ


 (ক) মেজর (বর্তমানে মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত) শফিউল্লাহ, সেকেণ্ড ইন কমাণ্ড।

 (খ) মেজর (বর্তমানে মৃত) আসজাদ লতিফ, কোম্পানী কমাার-অবাঙ্গালী।

 (গ) মেজর (বর্তমানে মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত) মইনুল হাসান, কোম্পানী কমাণ্ডার।

 (ঘ) ক্যাপ্টেন (বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার) আজিজুল রহমান, এ্যাডজুট্যাণ্ট।

 (ঙ) ক্যাপ্টেন (বর্তমানে কর্নেল) এজাজ আহমদ, কিউ, এম

 (চ) ক্যাপ্টেন (বর্তমানে ব্রিগেডিয়ার) মোহাম্মদ নাসিম, কোম্পানী অফিসার।

 (ছ) ক্যাপ্টেন (বর্তমানে মৃত) মোহাম্মদ রিয়াজ, কোম্পানী অফিসার-অবাঙ্গালী।

 (জ) ক্যাপ্টেন (বর্তমানে বোধ হয় পাকিস্তানে) নকভী, কোম্পানী অফিসার-অবাঙ্গালী।

 (ঝ) সেঃ লেঃ (বর্তমানে কর্নেল) মোরশেদ, কোম্পানী অফিসার।

 (ঞ) সেঃ লেঃ (বর্তমানে কর্নেল) ইব্রাহিম, কোম্পানী অফিসার, সিগন্যাল অফিসার।

 (ট) একজন ডাক্তার-বাঙ্গালী।

(৬) এই ব্যাটালিয়ানের সাথে জড়িত ২০/২৫ জন অবাঙ্গালী ছিল। এই প্রসঙ্গে আমি একটু বলতে চাই, ১৯৫১সালে কমিশন পাওয়ার পরে পাঞ্জাব রেজিমেণ্টে পোস্টিং পাই, এবং তার পর থেকে পাঞ্জাব রেজিমেণ্টের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নে কয়েক বৎসর তদানীন্তন ইপিআর-এ এবং অন্যান্য স্টপ জবে চাকুরী করি। বেঙ্গল রেজিমেণ্টের সঙ্গে চাকুরীর অভিজ্ঞতা বা সম্যক পরিচয় ছিল না। ব্যাটালিয়নের লোকজনদের ভিতর আমার কিছুমাত্র পূর্ব পরিচয় ছিল মেজর শফিউল্লাহ এবং মেজর কাজেম কামালের (অবাঙালী অফিসার) সঙ্গে। আর আমি যখন ব্যাটালিয়ানের দায়িত্বভার গ্রহণ করতে যাই তখন আমার পাক সামরিক বাহিনীর প্ল্যান সম্বন্ধে কোন ধারনা ছিল না। ঐ দিন গভীর রাত্রে তদানীন্তন ইস্টার্ন কমাণ্ডের কমাণ্ডার জেঃ টিক্কা খান আমার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তিনি প্রথমে আমাকে জিজ্ঞাসা করেন ঐ অঞ্চলের বিশেষ করে গাজীপুরের খবরাখবর কি। আমি উত্তরে জানাই যে অস্বাভাবিক কিছু পরিলক্ষিত হয় নাই। তিনি হুকুম করলেন গাজীপুরে ফ্যাক্টরীতে আমাদের সৈন্যসংখ্যা পুরো কোম্পানীতে উন্নীত করতে এবং অন্য কোম্পানীতে তৈরী অবস্থায় থাকতে। তদনুযায়ী, যেহেতু মেজর আসজাদ লতিফের কোম্পানীর এক প্লাটুন গাজীপুরে ছিল, তাকে তার কোম্পানীর অবশিষ্টংশ অর্থাৎ, দুই প্লাটুন গাজীপুরে পাঠিয়ে দিই এবং মেজর মইনের কোম্পানীকে জন্য কোন হুকুমের জন্য তৈরী থাকতে বলে দিই। অবশ্য পরে তাদের সম্বন্ধে আর কোন হুকুম আসে নাই। এ সময় আমার বা আমাদের কোন ধারণা ছিল না ঢাকা শহরে কি হচ্ছে। অবশ্য সন্ধ্যার দিকে