পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

303 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড ততোধিক ক্ষিপ্রতায় একটা মিলিটারীও তার দিকে হাল্কা মেশিনগান হতে গুলি ছড়িলো- অব্যর্থ লক্ষ্যদুটো বুলটেই কলিমুদিনের হৃৎপিণ্ড ভেদ করে বেরিয়ে গেছে। লুটিয়ে পড়েছে সে রাস্তায় ছটফট করছে সে, আর দমকে দমকে তার বুকের রক্ত রাস্তায় লাল লাল ছোপ একে যাচ্ছে। একটা বিরাট গর্ত, তখনও চারপাশে ধুয়ো উড়ছে, কাপড় আর পোড়া মাংসের কটু গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। আছে। একটা প্রশান্তির তৃপ্তির হাসিতে উদ্ভাসিত সে মুখে যন্ত্রণার চিহ্নও নাই। (আনোয়ারুল আবেদীন রচিত) সূর্য ওঠার স্বপ্ন নিয়ে ২ নভেম্বর, ১৯৭১ প্রেরণার আলোয় যে হৃদয় দীপ্ত, সে হৃদয় প্রকাশের উন্মাদনায় উন্মুখ। এই প্রেরণা জীবনের প্রেরণা এই আলো মেঘের পরে মেঘ জমা অাঁধারের ফাঁকে ফাঁকে টুকরো আলো নয়। অনেক অনেক আলো। জীবনকে সুখের ঐশ্বর্যে শান্তির পরশ বুলিয়ে আপন ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে পেতে চাই। ঐশ্বর্য বা শান্তিই প্রেরণার উৎস। প্রেরণার দীপশিখা যে হৃদয়কে স্পর্শ করেছে, সে হৃদয় অনির্বাণ- কেননা এই দীপশিখা দেহকে একদিনে উত্তপ্ত করেনি। সময়, হ্যাঁ প্রচুর কালহননের পর বিবেকতাড়িত মন একটি বিশেষ মুহুর্তে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। হৃদয় তখন প্রকাশের প্রতীক্ষায় মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। আমরা প্রেরণা পাই। আলো জুলে, আলো নেভে না। তথাপি ঝড় ওঠে। বাতাস ছোটে। দীপশিখায় কপিন জাগে। কখনো মৃদু, কখনো ভয়ঙ্কর। তাই বলে কি নিভিয়ে দেবে প্রেরণার আলো। নীরব অন্ধকার ঠেলে দেবে স্বর্ণোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ? না, দিতে পারে না কস্মিনকালেও না। প্রেরণার আলো অন্তরে জুলেছে। জেনেছি প্রেরণার উৎস কোথায়। শুধু পাইনি ফসলটুকু। কিন্তু শুনেছি তো কবির কষ্ঠে, “সেদিনও এমনি ফসল বিলাসী হাওয়া মেতেছিল তার চিকুরের পাকা ধানে।” পাকা ধান আর রূপসীর শরীরের মিষ্টি ঘাণ। মনে হলে কেমন যেন আবেশ জাগে। উত্তাপও। অথচ না পাওয়ার একটা জলাত বেদনা। না না না, এ হতে পারে না। পেতেই হবে। আলোর রশ্মিটা দিব্যদর্শন করেছি। আর বেশী দূরে নয়। তিমির রাত্রির অবসান হবে। ভোর হবে। পাখি ডাকবে। আবার জানালায় দাঁড়িয়ে প্রভাতসূর্যোদয় প্রাণভরে উপভোগ করবো। হঠাৎ চমকে উঠবো, একি সন্ধ্যা তুমি, এমনি অকালে!