পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৯৫

 ঢাকায় প্রতিজ্ঞা লইবার এক বছর পরে রাজশাহী বিভাগের যুবকেরা ঈশ্বরদীতে বিভাগীয় সম্মেলনে মিলিত হইয়া সমস্ত অবস্থার পর্য্যালোচনা করিয়াছে। ধনিক শ্রেণীর ষড়যন্ত্রকে বানচাল করিয়া সুখী পাকিস্তান গঠনের জন্য নূতনভাবে প্রতিজ্ঞা লইয়াছে। সম্মেলনে আন্দোলনের জন্য একটা ইস্তাহার এবং কয়েকটি প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে। কৃষক-মজুরকে তাহাদের শ্রেণী সংগঠন সংঘবদ্ধ করিয়া জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করিবার জন্য যুবসমাজ প্রতিজ্ঞা লইয়াছে। খাদ্য সংকট প্রতিরোধ, ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, ছাঁটাই বন্ধ, জমিদারী উচ্ছেদ, চিকিৎসার পূর্ণ ব্যবস্থা এবং সংকটের হাত হইতে শিক্ষাব্যবস্থা রক্ষা করিবার জন্য প্রস্তাব লওয়া হইয়াছে। সম্মেলনে গৃহীত ইস্তাহার এবং প্রস্তাবাদী কার্য্যে পরিণত করিতে যুবসমাজ আপোষহীন সংগ্রাম করিবে। পূর্ণ আজাদী এবং গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করিতে যুবলীগ যুবসমাজকে আহ্বান জানাইতেছে।

 দিকে দিকে যুব সংগঠন করিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সংঘবদ্ধ হইবার জন্য যুবলীগ আবেদন জানাইতেছে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষ হয় নাই। জনগণের মুক্তি জন্য আমরা বৃটিশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিয়াছি। বৃটিশের শোষণের বিরুদ্ধেই ছিল আমাদের সংগ্রাম। আজও শোষণ বন্ধ হয় নাই। নূতনভাবে শোষণ আরম্ভ হইয়াছে। দেশী বিদেশী কোন শোসককেই আমরা বরদাস্ত করিব না। সমস্ত রকমের শোষণ ধ্বংস করিয়া গণআজাদী প্রতিষ্ঠার জন্যই যুবসমাজ সংগ্রাম করিয়াছে। গণআজাদী প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত যুবসমাজ থামিবে না। পূর্ণ আজাদী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুবসমাজ যে প্রতিজ্ঞা নিয়াছিল সে প্রতিজ্ঞা পূর্ণভাবে পালনে করিবেই। কোটি কোটি মজলুম মানুষের জন্য পূর্ণ আজাদী হাসিল করিবেই। গণতান্ত্রিক যুবলীগ তাই এই পবিত্র প্রতিজ্ঞা পালনের জন্য যুবসমাজকে উদাত্ত আহ্বান জানাইতেছে।

মোঃ একরামুল হক
প্রকাশক