দেশ কতটা গণতান্ত্রিক তাহার প্রকৃত প্রমাণ মিলে সেই দেশের শাসক শ্রেণীর কৃষক-মজুরের দাবী-দাওয়া ও তাহাদের আন্দোলনের প্রতি মনোভাবের মধ্য দিয়া। আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদীদের ন্যায় মুখে গণতন্ত্রের বুলি ও কার্যে নিগ্রো নির্যাতন ও কৃষক-মজুর শোষণ কখনো গণতন্ত্রের নীতি হইতে পারে না।
পাকিস্তানে এমন শক্তিশালী গণতান্ত্রিক যুব আন্দোলন গড়িয়া উঠুক যাহা দুনিয়ার প্রগতিশীল যুব আন্দোলনের পাশে সমমর্থ্যাদা লইয়া দাঁড়াইতে পারে। সেই উদ্দেশ্যে প্রতি গ্রাম বন্দর ও কলকারখানায় যুবলীগের শাখা গঠন করিতে হইবে। তাহাদের দাবী-দাওয়া লইয়া আন্দোলন করিতে হইবে। নিম্নলিখিত কার্যসূচীর ভিত্তিতে আন্দোলন গড়িয়া তুলিবার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহবান জানানো যাইতেছেঃ
১। অবলিম্বে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করিয়া পূর্ণ আজাদী ঘোষণা করিতে হইবে। আগামী অক্টোবরের বৃটিশ উপনিবেশ সম্মেলনে যোগদান করা চলিবে না। বৃটিশ আমলের কোন ইংরাজ অফিসারের পেনসনের খরচ পাকিস্তান সরকার বহন করিতে পারিবে না। ১৯৪৮ সালের মধ্যেই পাকিস্তানের স্ট্রালিং পাওনা কড়ায় গণ্ডায় বুঝিয়া লইতে হইবে কোন রকম দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করা চলিবে না।
২। প্রাপ্ত বয়স্কদের সার্ব্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে অবিলম্বে নূতন গণপরিষদ মারফৎ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রণয়ন করিতে হইবে।
৩। ভাষার ভিত্তিতে স্বয়ং শাসন অধিকার সম্পন্ন প্রদেশ গড়িবার এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার মানিয়া লইতে হইবে।
৭। বড় বড় শিল্প, বড় ব্যাঙ্ক, ইনসিওরেন্স কোম্পানীগুলি জাতীয়করণ করিতে হইবে। শ্রমিকদের খাটুনির সময় আট ঘণ্টা বাঁধিয়া দিতে হইবে এবং বাঁচার মত মজুরীর ব্যবস্থা করিতে হইবে।
৮। ব্যাঙ্ক, চা বাগান, খনি ইত্যাদি বড় বড় ব্যবসায় নিয়োজিত বিদেশী মূলধন বাজেয়াপ্ত করিতে হইবে। মার্শাল প্লান অথবা অন্য কোন বিদেশী মূলধন জাতীয় স্বার্থবিরোধী শর্তে গ্রহণ করা চলিবে না।
৯। বিনা ব্যয়ে শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা চালু করিতে হইবে।
১০। রাষ্ট্রের খরচে স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করিতে হইবে।
১১। জনগণকে সামরিক শিক্ষা দিতে হইবে এবং জনগণের সামরিক বাহিনী গড়িয়া তুলিতে হইবে।
১২। দের সমান গণতান্ত্রিক অধিকার স্বীকার করিতে হইবে।
পাকিস্তান গণতান্ত্রিক যুবলীগের রাজশাহী বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির সেক্রেটারী মোহাম্মদ একরামূল হক কর্তৃক এই ইস্তাহার উত্থাপিত হয় এবং উপস্থিত প্রতিনিধিগণ কর্তৃক সর্ব্বসম্মতি ক্রমে গৃহীত হয়।