পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
২২8

আমাদের বিদেশ থেকে আনতে হয় না। নিজ দেশের লবণ কেন সময় মত আনা হ’ল না। যখন লবণ কমে আসছিল তখন Civil Supply Minister সাহেব কোথায় ছিলেন? করাচীতে এই ব্যাপার সম্বন্ধে বহয়রং হওয়া দরকার। বাঙ্গালী লবণ অভাবে মরে নাই তবে কষ্ট হয়েছে যথেষ্ট।

 রসুলুল্লাহকে আল্লাহ বলেছেনঃ “হে মোহাম্মদ, পাল্লা ঠিক রাখ।” নেকি বদি পাল্লায় ওজন হবে। লবণের সের ১৬ টাকা হ’ল। আমার প্রধান মন্ত্রী পাগল হয়ে চলে গেলেন করাচীতে। আমি বলি আমার দেশে প্রচুর লবণ আছে। Search করুন। লবণ বের হবে। পুলিশ লাগিয়ে দিন। আমি প্রধান মন্ত্রী ও Civil Supply Minister সাহেবকে বলব যে লবণ Control করলে চলবে না। যেখানে control সেখানে অভাব। আমার কথা হচ্ছে যে, আপনারা ঈমান ঠিক রেখে প্রাণপণ চেষ্টা করুন। আপনারা চাষীর মন্ত্রী, গরীবের মন্ত্রী। আপনারা প্রাণপণ চেষ্টা করুন। পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন সাহেবকে force করুন। আমি চাই যারা এই সমস্ত neglect করেছে তাদের সরিয়ে দিন Department থেকে। তাদের থাকবার দরকার নাই। তাদের জন্য আপনার বদনাম হয়। আমি জানি Civil Supply Minister সাহেব অনেক অফিসারকে punishment দিয়েছেন। কেন আজ দোষী অফিসারদের ছেড়ে দেওয়া হ’ল? কেন ৫০ লক্ষ মণের জায়গায় ৫ লক্ষ মণ লবণ আসল?

 যখন লিয়াকত আলী খানসাহেবের মৃত্যু হ’ল তখন লবণের মূল্য ১৬ টাকা সের হল। সত্যিকারের বিপদ পাকিস্তানে হচ্ছে। ভয় করবেন না। আপনি ভয় করবেন না। এ বিপদ কেটে যাবে। লবণের অভাব দূর করুন। tax বাদ দিন। যাতে লোকে কম মূল্যে লবণ পায় সেই চেষ্টা করুন। এই আমার নিবেদন।

 Mr. Benode Chandra Chakraborty: Mr. Chairman, Sir, আমাদের সরবরাহ সচিব লবন সম্পর্কে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা শুনে বাস্তবিকই আমার মনে হ’ল যেন তিনি ব্যর্থতার এক করুণ কাহিনী বর্ণনা করছেন। তিনি লবণের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন যে, Central government-এর অব্যবস্থার দরুন এই সংকট উপস্থিত হয়েছে। তাঁর এই কৈফিয়ৎ শুনে দেশের লোক সুখী হতে পারবে না। এই দেশের কর্তৃত্বভার যাঁদের উপর ন্যস্ত রয়েছে, তাঁদের দায়িত্বও কম নয়। এই বিরাট পূর্ববঙ্গের অধিবাসীদের সুখ, দুঃখ অভাব অভিযোগ সমস্ত কিছু দেখাশুনা দায়িত্বভার যাঁরা গ্রহণ করেছেন, আজ তাঁদের এই করুন কাহিনী শুনে জনসাধারণ সন্তুষ্ট হতে পারবে না। লবণ সঙ্কট সম্ভাবনা সম্বন্ধে আমরা পূবেৰ্ব যখন সরবরাহ সচিবকে বলেছিলাম তখন তিনি warning অগ্রাহ্য করে বলেছিলেন যে লবণের সরবরাহ ব্যবস্থা তাঁরা যেভাবে টিক করলেন তাহা না করলে লবণ সঙ্কট দূর হবে না। আজ Central Government-কে দায়ী করলেও আমি বলতে বাধ্য যে Central এবং Provincial Government-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবার দায়িত্ব Provincial Government-এরই উপর। সেজন্য আমি বলব যে, Provincial Government EET দায়িত্ব পালনের অক্ষম হয়েছে। এই দারুণ লবণ সঙ্কটের দিনেও আমরা সরবরাহ সচিবের কোন ঝঃধঃবসবহঃ ইতিপূবেৰ্ব পাই নাই- কাজেই বলতে হয় যে তিনি তার দায়িত্ব এ যাবৎ এড়িয়ে গিয়েছেন। সমস্ত দোষ Central Government-এর উপর চাপান সত্ত্বেও স্বভাবত এই কথাই মনে হয় যে Provincial Government-ও তার দায়িত্ব পালন করতে পারে নাই। পূর্ব বঙ্গে প্রতি বৎসর কত লবণের প্রয়োজন তা সরবরাহ সচিবের নিশ্চয়ই জানা আছে। আমরা দেখছি অনবরত এটা না একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে আছি। কোন সময় চাউলের অভাব, কোন সময় চিনির অভাব, আবার কোন সময় তেলের অভাব একটা না একটা অভাব লেগেই আছে। আমাদের অভাবের জন্য দায়ী কে? অনেক লোভী ব্যবসায়ী এই লবণের অভাবের সময় উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে অনেক অর্থলাভ করেছে। গভর্ণমেণ্ট তাদের নিবৃত্ত করতে কোন চেষ্টা করেন নাই। গভর্ণমেণ্টের হাতে Public Safety Ordinance রয়েছে, যা তাঁরা সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারেন। তাছাড়া গভর্ণমেণ্টের হাতে আরও অনেক ক্ষমতা রয়েছে যার দ্বারা ইচ্ছা করলেই এইসব অতি লোভীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু তা তাঁরা করেন নাই লবণ আমদানীর কথা অনেকদিন হইতে শুনছি কিন্তু লবণ আজও এসে পৌছায়নি। আমরা বুঝতে পারছি না লবণের দাম আরও বাড়বে কিনা। দেশে রীতিমতো প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ না করতে পারলে যে উদ্দেশ্যে Civil Supply Department সৃষ্টি করা হয়েছে তা ব্যর্থ হয়েছে। আমার মনে হয়