পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
২২৬

in East Bengal and its prices are very exaggerated. He said that the Central Government had a placed salt in a large quantity at the disposal of the Provincial Government for distribution. It is the responsibility of the provincial Government to arrange the fair and proper distribution of the salt in the Province, he added.”

 জনাব ফজলুর রহমান Press Reporter-দের কাছে এই বিবৃতি দিয়েছেন। যদি এই বিবৃতি সত্য হয় তাহলে সম্পূর্ণ দায়িত্ব পূর্ববঙ্গ সরকারের। তিনি বলেছেন যে যথেষ্ট পরিমাণ লবণ সরবরাহ করা হয়েছে, পূর্ববঙ্গ সরকার Fair distribution করতে পারেননি, তাঁদের গাফিলতির জন্য দাম বেড়েছে। আর একটা কথা তিনি বলেছেন লবণের দাম exaggerate করা হয়েছে। একথা যদি সত্য হল তাহলে ফজলুর রহমান সাহেব এখানে উপস্থিত থাকলে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতাম যে দাম কি পরিমাণ বাড়লে সেটাকে exaggerate বলা যেতে পারে। সরবরাহ সচিবের বিবৃতিতে সর্বোচ্চ মূল্য রয়েছে ৬ টাকা সের। যে লবণ দুই আনা ১০ পাই হতে চার আনা সের দরে বিক্রি হ’ত তার দাম যদি ৬ টাকা হয় তাহলে কত গুণ হয়েছে? সরবরাহ সচিব তাঁর বিবৃতিতে রাজশাহীতে লবণের সের ১ টাকা বলেছেন, আর নবাবগঞ্জে লবণের সের আট আনা বলেছেন। অনুসন্ধান করে দেখুন যে Border এলাকায় দাম কত, কারণ সেইসব জায়গায় লবণ অন্য রাষ্ট্র থেকে smuggled হয়ে আসে। রাজশাহী বা নবাবগঞ্জে দাম কম বলে মন্ত্রী মহাশয় আনন্দ প্রকাশ করেছেন; রাজশাহী বা নবাবগঞ্জে চোরাকারবারীরা smuggle করে এনে লবণ বিক্রি করছে, তাই দাম সস্তা। এতে যদি আমরা আনন্দ প্রকাশ করি তাহলে চোরাকারবারীদের সমর্থন করা হবে। অন্য জায়গা থেকে চোরাকারবার করে লবণ আনছে তারা অসাধু, তাদের যদি প্রশ্রয় দেন তাহলে তারা যখন অর্থের বিনিময়ে দেশের সমস্ত জিনিষ পার করে দেবে, তখন তাদের অসাধু বলার আর মুখ থাকবেনা।

 সংবাদপত্রে দেখা যায় নানা জায়গায় লবণের দর ভীষণভাবে বেড়ে গিয়েছে। বেশী দূর নয় এই নরায়ণগঞ্জে লবণ ১৫/১৬ টাকা সের। শুনলাম নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে ২জন লোক লবণ খেয়ে মারা গিয়েছে- প্রকাশ হয়েছে লবণের ভিতর Bone dust মিশানোর ফলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। (Voice: কোথায়?) এ ঘটনা হয়েছে বেশী দূর নয় এই নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে। গভর্ণমেণ্ট একটু খোঁজ করলেই জানতে পারবেন। আজ চট্টগ্রাম থেকে খবর এসেছে যে সেখানে ভেজাল লবণ খেয়ে লোকে পেটের অসুখে ভুগছে। সরবরাহ সচিবের দেশ বরিশালের রিপোর্ট সেখানে লবণের সঙ্গে চিনি মিশান হচ্ছে। এই উপলক্ষে আমার একটি গল্প মনে পড়ে গেল। এক জায়গায় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সেখানে এক ঠাকুর মহাশয় থাকতো, খেতে পেতো না। তার এই অবস্থা দেখে তার এক শিষ্য তাকে বললো “ঠাকুর মহাশয়, আপনি আমাদের দেশে চলুন সেখানে জিনিষপত্র সস্তা।” এই কথায় ঠাকুর মহাশয় তার শিষ্যের বাড়ীতে গেল। শিষ্য বাজারে গিয়ে ঠাকুর মহাশয়ের জন্য নানা রকম জিনিষ কিনে আনলো। ঠাকুর মহাশয় শিষ্যকে জিজ্ঞাসা করলো এসব জিনিষের দাম কত। শিষ্য উত্তর দিল যে এখানে সব জিনিসের দাম এক আনা। চা’ল মুড়ি ও মুড়কি সব জিনিসের এক আনা দাম। ঠাকুর মহাশয় তো এই কথা শুনে তল্পীতল্পা গুটিয়ে রওনা হলেন। শিষ্য জিজ্ঞাসা করলো যাচ্ছেন কেন? ঠাকুর মহাশয় বলল যে যেখানে মুড়ি মুড়কির দাম একদর সেখানে থাকবো না। সেই অবস্থা দাঁড়িয়েছে আমাদের এখানে লবণে ভেজাল চিনি আর চিনিতে ভেজাল লবণ এবং গর্ভমেণ্টকে গালাগালি করে লাভ নেই। আমার এই সম্পর্কে প্রস্তাব হচ্ছে যে ২টি scheme নিতে হবে। একটি short term আর একটি long-term। প্রথমে short term নেওয়া দরকার, পরে long-term scheme হবে। short-term scheme বিষয়ে বলতে চাই যে, immediately পশ্চিমবঙ্গ হতে, ভারত হতে directly আনা হোক এবং পশ্চিম বঙ্গে লবণ এখানে আনতে গেলে করাচী হয়ে জাহাজ তারপর এখানে আসবে, এ নীতি বন্ধ করুন। সরাসরি লবণ আমদানীর ব্যবস্থা করুন। আর স্বরাষ্ট্র সচিবের হাতে পুলিশ আছে। কার ঘরে লবণ মজুত আছে তা তাঁর জানা উচিত। পুলিশ দিয়ে মজুত লবণ বের করে জনসাধারণের মধ্যে যাতে বিলি হয় তার বন্দোবস্ত করা উচিত। long-term scheme সম্বন্ধে বলবো যে, এই পূর্ববঙ্গে লবণ তৈরীর ব্যবস্থা করুন। এ সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগতভাবে বারবার বাজেট বক্তৃতায় বলে