পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৪১৪
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক প্রচারপত্র মাওলানা ভাসানী মে, ১৯৫৫

দেশের ডাক! মুক্তি ডাক!!

পূর্ব-বঙ্গ আওয়ামী লীগ কর্মী সম্মেলন

কৃষক-মজদুর, ছাত্র-যুবক, শিল্পী ও ব্যবসায়ী দলে দলে যোগদান করিয়া সুষ্ঠু কর্মসূচী গ্রহণ করুন।
তাং- ২৬শে নভেম্বর, ১০ই অগ্রহায়ণ, শনিবার, কর্মী সম্মেলন
২৭শে নভেম্বর, ১১ অগ্রহায়ন, রবিবার, বিরাট জনসভা

স্থানঃ কাগমারী (টাঙ্গাইল)

 আগামী ১ মাসের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদের সভা আহবান করিতে হইবে। বর্তমান সরকার ২১ দফা পালন করিতে ধর্ম্মত ও আইনতঃ বাধ্য। বিশ্বাসঘাতকতা করিলে সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়িয়া গণ আন্দোলনের ঝড় বহিয়া যাইবে।

 ১। কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে শুধু সামরিক বিভাগ (নৌ বিভাগের সদর দফতর পূর্ব পাকিস্তানে থাকিবে), মুদ্রা প্রস্তুত, বৈদেশিক নীতি (বৈদেশিক বাণিজ্য পূর্ব পাকিস্তানে থাকিবে); এই ক্ষমতা তিনটি ছাড়া সমস্ত ক্ষমতা এবং যুক্ত নির্বাচন আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট সোপারেশ করিয়া প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ হইতে পূর্ব বঙ্গের আইন পরিষদের আসন্ন বৈঠকে প্রস্তাব পাশ করিতে হইবে।

 ২। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করিতে হইবে।

 ৩। নূরুল আমিন সরকার ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিবার ব্যবস্থা করিয়া জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ নামে যে প্রজা উচেছদ আইন করিয়া রাখিয়াছে, সেই আইন বাতিল করিয়া সত্বর আইন সভা আহবান করিয়া বিনা ক্ষতিপুরনে ২১ দফা ওয়াদা অনুযায়ী জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের আইন পাশ করিতে হইবে। খাজনার হার কম, সার্টিফিকেট প্রথা রহিত, বকেয়া খাজনার সুদ ও নদী সিকস্তি জমির নজরানা মওকুব করিতে হইবে।

 ৪। পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি, সিয়াটো চুক্তি, পাক-বাগদান চুক্তি প্রভৃতি জাতীয় সংহতির পরিপন্থী সাম্রাজ্যবাদী চুক্তি বাতিল করিতে হইবে। গত সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত অধিকাংশ পরিষদ সদস্য ওয়াদাবদ্ধ হইয়া সামরিক চুক্তি বাতিলের জন্য যে মর্মে দস্তখত দিয়াছিলেন সেই মর্মে আইন পরিষদে প্রস্তাব পাশ করিতে হইবে।

 ৫। স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজের ছাত্রদের বর্তমান বেতনের হার এবং হোষ্টেল খরচ অবিলম্বে হ্রাস করিতে হইবে। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে সরকারী নিয়ন্ত্রণাধীন করিতে হইবে।

 ৬। লিকুইডেটেড ও গ্রাম্য সমবায় সমিতিসমূহের খাতক নির্ঘরিত কিস্তিবন্দী মোতাবেক কিস্তির টাকা আদায় করিতে হইবে। ঋণসালিসী বোর্ড কর্তৃক মাফ দেওয়া সুদ (কনট্রিবিউশন) আদায় ও সার্টিফিকেট বন্ধ করিতে হইবে। যাহাদের কিস্তিবন্দী করা হয় নাই তাহাদের জন্য কিস্তি নির্ধারণ করিতেই হইবে।

 ৭। (ক) পাটের মূল্য ন্যূনপক্ষে প্রতিমণ ৩০ টাকা বাঁধিয়া দিতে হইবে। শুধু কয়েকজন ব্যবসায়ীকে পাট বিক্রয়ের লাইসেন্স না দিয়া বহুসংখ্যক ব্যবসায়ী যাহাতে লাইসেন্স পায় তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে।