পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৪১৬

 ১৮। মুসলমানগণ যাহাতে নামাজ, রোজা, হজ্ব, জাকাত ইত্যাদি শরিয়ত সংগত কাজে অবহেলা না করেন এবং সকল শ্রেণীর নাগরিকদের চরিত্র গঠনের জন্য সরকারী প্রচার (তবলীগ) বিভাগ খুলিতে হইবে। হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যও অনুরূপ ব্যবস্থা করিতে হইবে।

 ১৯। ঘুষ ও স্বজনপ্রীতিতে দেশবাসী অতিষ্ঠ, সত্বর ইহার স্থায়ী প্রতিকার চাই। শুধু চুনোপুঁটিকে শাস্তি দিলে চলিবে না, বড় বড় রুই-কাতলাকেও কঠোর শাস্তি দিতে হইবে।

 ২০। রেলের তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া কমাইতে হইবে এবং যাত্রীদের জন্য মোছাফেরখানা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করিতে হইবে।

 ২১। সামরিক বিভাগে উচ্চ ও নিপদে উপযুক্ত পরিমাণে বাঙ্গালী গ্রহণ করিতে হইবে।

 ২২। গরীব কৃষকদের ঘরদরজা ও নৌকা নির্মাণের জন্য প্রচুর পরিমাণে শাল কাঠ ও টিন সরবরাহ করিতে হইবে।

 ২৩। প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রীসংখ্যা ৯ জনের বেশী কিছুতেই রাখা চলিবে না, ডেপুটি মন্ত্রী, পালামেণ্টারী সেক্রেটারী ইত্যাদি ২১ দফার ওয়াদানুযায়ী (মাথা ভারী শাসন মান) মোটেই নিযুক্ত করা চলিবে না।

 ২৪। বর্তমানে বন্যার্তদের সাহায্যার্থে যে সমস্ত চাউল, ধান, চিনি ইত্যাদি জিনিসপত্র স্বল্প মূল্যে সরকার সরবরাহ করিতেছেন তাহাতে সত্যিকারের গরীব জনসাধারণের উপকার হইতেছে না। বরঞ্চ সরকারের সুষ্ঠু নীতির অভাবে উহাতে চোরাকারবারী ও মোনাফাখোরীদের বৃটিশ ও মুসলিম লীগ আমলের চেয়ে বেশী সুযোগ দেওয়া হইয়াছে। একজন্য সত্বর ইহার প্রতিকারার্থে বিক্রয়ের নির্দিষ্ট দর বাঁধিয়া সুষ্ঠুভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা করিতে হইবে।

 বিঃদ্রঃ- কিছু দিনের মধ্যেই গণপরিষদে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র পাশ হইয়া যাইবে। অতএব, সারাদেশময় আন্দোলন করিয়া যদি ২১ দফা শাসনতন্ত্রে গ্রহণ করাইতে না পারি তাহা হইলে পাকিস্তান ও আমাদের বংশধরগণের সর্বনাশ হইবে। তাই দলে দলে এই সম্মেলনে যোগদান করিয়া ২১-দফাকে বাস্তবে রূপদান করিতে সুষ্ঠু কর্মপন্থা গ্রহণ করিবার জন্য আকুল আবেদন জানাইতেছি।

 *ময়মনসিংহ হইতে মটর বাসে, ঢাকা হইতে লঞ্চ-ষ্টিমারে, সিরাজগঞ্জ ঘাট হইতে লঞ্চ ও নৌকা যোগে যাতায়াত করা যাইবে।

আরজ গোজার
মোঃ আবদুল হামিদ খান ভাসানী
সভাপতি পূবর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ