পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
৪২৪

যুক্তফ্রণ্টের ১৪ মাসের শাসনের খতিয়ান

  • ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্ব্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করিবার পর পরাজিত ও পর্যুদস্ত মুসলিম লীগ যখন জনগণের বিজয়কে নস্যাৎ করিবার জন্য ৯২ (ক) ধরা জারী করিয়া ১৫শত দেশ কর্মীকে হাজতে পাঠাইয়াছিল, মওলানা ভাসানীর উপর নির্বাসন আদেশ জারী করিয়াছিল, দেশদরদী নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রুজু করিয়াছিল, ষড়যন্ত্র করিয়া আদমজী মিলে দাঙ্গা বাধাইয়া শত শত গরীব চাকুরীজীবিকে হত্যা করিয়াছিল, সেই কুখ্যাত মুসলিম লীগের নিকট আত্মসমর্পণ করিয়া মন্ত্রীত্ব গ্রহণ।
  • পূর্ব্ব বাংলার প্রাণের দাবী ২১ দফাকে ঘরোয়া বলিয়া উহাকে কার্যে পরিণত করিতে অস্বীকার করা।
  • পূর্ব্ব পাকিস্তানের উপর দুই-দুইবার বন্যার প্লাবন হওয়া সত্ত্বেও উহা প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থা না করা।
  • পূর্ব্ব পাকিস্তানের প্রকৃত খাদ্য ঘাটতি অস্বীকার করিয়া আওয়ামী লীগের পুনঃ পুনঃ সতর্ক বাণীকে উপেক্ষা করিয়া দুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না করা।
  • পরাজিত হওয়ার ভয়ে ১৪ মাস কাল পর্য্যন্ত বিভিন্ন উপ-নির্বাচন ঠেকাইয়া রাখা।
  • দেড় বৎসর কাল পর্য্যন্ত সভা আহ্বান না করিয়া জনগণের নির্ব্বাচিত প্রতিনিধিদের একত্রে বসিয়া দেশের সমস্যাদি আলোচনা ও সমাধানের সুযোগ না দেওয়া।
  • নিজেদের দলীয় লোকদের মধ্যে জনগণের জন্য সংগৃহীত ৩৩ লক্ষ মণ চাউল নামমাত্র মূল্যে বিতরণ করিয়া স্বজনপ্রীতির পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন।
  • পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনায় পূর্ব্ব পাকিস্তানের ন্যায্য স্বার্থ বিসর্জন দেওয়া।
  • ২১ দফার খেলাফ করিয়া এক হাজার টাকার ঊর্ধ্বে মন্ত্রিগণের বেতন গ্রহণ করা।
  • পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন খাতে ১২০০ কোটি টাকা দিয়া এবং পূর্ব্ব পাকিস্তানকে মাত্র ২শত কোটি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করিয়া পূর্ব্ব পাকিস্তানকে বঞ্চিত করা।
  • ২১ দফা ওয়াদাকে খেলাফ করিয়া শত শত দেশকর্ম্মকে বিনা বিচারে কারাগারে নিক্ষেপ করা।
  • নিজেদের দলীয় কোনদের মধ্যে লাইসেন্স, পারমিট এবং অন্যান্য সর্ব্বরকম সুবিধা বিতরণ করিয়া দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রদর্শন করা।

আওয়াম লীগ কোয়ালিশন সরকারের আড়াই মাস কাল শাসনের খতিয়ান

১। মন্ত্রীত্ব গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সকল রাজবন্দীদের মুক্তিদান ও নিরাপত্তা আইনে শাস্তিপ্রাপ্ত বা মোকদ্দমায় জড়িত সমস্ত রাজবন্দীদের খালাস দান।

২। শাসনভার গ্রহণের মাত্র ১১ দিনের মধ্যে আইন পরিষদের অধিবেশন আহ্বান, বাজেট পাস ও নিরাপত্তা আইন বাতিল।

৩। পাটের লাইসেন্স ফি উঠাইয়া দেওয়া।

৪। বকেয়া খাজনা সুদ সমেত মওকুফ।

৫। সার্টিফিকেট প্রথা উচ্ছেদ।