পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৬১১
শিরোনাম সূত্র তারিখ
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠিত দৈনিক সংবাদ ২৬শে জুলাই, ১৯৫৭

পাকিস্তানের উভয় অংশের গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সমন্বয় পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি নামে নয়া রাজনৈতিক দল গঠিত ঢাকায় অনুষ্ঠানরত গণতান্ত্রিক সম্মেলনের অভূতপূর্ব সাফল্যঃ বারো শতাধিক প্রতিনিধির সমাবেশে জাগ্রত জনমতের অভিব্যক্তি

বিষয় নির্বাচন কমিটিতে খসড়া ম্যানিফেষ্টো গৃহীতঃ প্রতিনিধি সভায় সাময়িকিভাবে অনুমোদন দান

 সারা পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকল্য (বৃহস্পতিবার) ঢাকায় পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি নামের একটি নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান জন্মলাভ করিয়াছে। সমগ্র পাকিস্তান গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের সমন্বয়ে গঠিত এই রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্বের ফলে পাকিস্তানের ইতিহাসে এক স্বর্ণোজ্জ্বল সংগ্রামী অধ্যায় সূচনা হইল।

 গণতন্ত্রের অতন্দ্র প্রহরী মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে পাকিস্তানের উভয় অংশের বারো শতাধিক কর্মী ও নেতা যোগদান করিয়াছেন।

 অসাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে নয়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানটি গঠনের প্রস্তাব করা হইয়াছে। সমগ্র পাকিস্তানে ইহাই বৃহত্তম অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক সংস্থা। আশা ও আকাঙ্খার আলোকে উদ্ভাসিত প্রতিটি প্রতিনিধি নয়া প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রস্তাবটির প্রতি সমবেতভাবে সমর্থন জানাইয়াছেন। গণতন্ত্রী দল, ন্যাশনাল পার্টি এবং ভাসানীপন্থীগণ এই নয়া পার্টিতে যোগদান করিবেন বলিয়া জানা গিয়াছে। পশ্চিম পাকিস্তানের সর্বজনমান্য নেতা আবদুল গফার খান, জি এম সৈয়দ, মিয়া ইফতেখার উদ্দিন, মাহমুদুল হক ওসমানী, আবদুল মজিদ সিন্ধী, আবদুস সামাদ খান আচাকজারী (আচাকজাই), আবরার আবদুল গফুর, গোলাম মোহাম্মদ লাগারী, হাশিম খান গীলরাই; মাহমুদ আলী কাসুরী, এয়ার কমাণ্ডার ঝাণ্ডুয়া প্রমুখ এক শতাধিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনের মঞ্চটি জনসাধারণের বিভিন্ন দাবী-দাওয়া সম্বলিত বহুসংখ্যক পোষ্টার দিয়া সজ্জিত করা হইয়াছিল। অপরাহ্নের অধিবেশনে সীমান্তের গান্ধী খান আবদুল গফফার খান এবং প্রাদেশিক মন্ত্রী জনাব মাহমুদ আলী যোগদান করেন। সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে বিপুল উদ্দীপনার সহিত প্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সহস্রাধিক গণতান্ত্রিক কর্মী সদরঘাটস্থ রূপমহল সিনেমা হলে সমবেত হন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং কোরান শরীফ তেলাওয়াতের পর সারা পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলনে অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি জনাব ইয়ার মোহাম্মদ খান অতিথি ও কর্মীদের স্বাগত জানাইয়া দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করিয়া বক্তৃতা দেন। তিনি তাহার বক্তৃতায় বর্তমান আওয়ামী সরকারের কার্যক্রম ও জনাব সোহরাওয়ার্দীর পররাষ্ট্রনীতির তীব্র সমালোচনা করিয়াছেন।

 ইহার পর সভাপতি মওলানা ভাসানী মুহুর্মুহু জিন্দাবাদ ধ্বনির সংগে ভাষণ দান করিতে উঠেন। তিনি বিভাগপূর্ব কাল হইতে শুরু করিয়া আওয়ামী লীগের ক্ষমতা লাভ এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করিয়া দীর্ঘ বক্তৃতা করেন। তাঁহারা বক্তৃতা উর্দুতেও অনুবাদ করিয়া পাঠ করা হয়।

 পশ্চিম পাকিস্তানী নেতাদের বক্তৃতার পর জনাব ইয়ার মোহাম্মদ খান নয়া গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। জনাব মোহাম্মদ তোয়াহা প্রস্তাবটি সমর্থন করেন। প্রস্তাবটিতে বলা হয়: পাকিস্তানের