পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী সম্মেলনে জয় বাংলা ২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ বাংলাদেশ ১ম বর্ষঃ ২০শ সংখ্যা কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী সম্মেলনে বাংলাদেশ কুয়ালালামপুর, ১৪ই সেপ্টেম্বর-আজ কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিবসে একজন বৃটিশ এম, পি, ভারতে বাংলাদেশ শরণার্থীদের ৯৫০টি শিবিরকে ৯৫০টি গাজা ব-দ্বীপ বলে অভিহিত করেন। এবং বলেন ‘এই ৯৫০টি শরণার্থী শিবির পাক-ভারত যুদ্ধের ৯৫০টি সম্ভাব্য কারণ হিসাবে বিরাজ করছে। উক্ত বৃটিশ এম, পি, হচ্ছেন বৃটিশ চাকরী-বিনিয়োগ দফতরের উপমন্ত্রী মিঃ কে বেকার। তিনি বলেন, চোখের পক্ষে বিরক্তিকর দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না। নিউজিল্যাণ্ডের প্রতিনিধি মিঃ এইচ, সি, টেম্পেল্টন সতর্কবানী উচ্চারণ করে বলেন যে, কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলো যদি অবিলম্বে প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়বে, যার ফলে উভয় দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে পড়বে। তিনি আরও বলেন যে, নিউজিল্যাণ্ডের প্রাধানমন্ত্রী মিঃ কিথ হলিওক ইতিমধ্যেই ইয়াহিয়া খানকে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যা চায় তা মেনে নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। সম্মেলনে একাধিক বক্তা বাংলাদেশের শরণার্শীদের জন্য সাহায্য প্রেরণের কাজ তুরান্বিত করার আহবান জানান। কুয়ালালামপুরে বিপন্ন মানবতা ও মরণোন্মুখ গণতন্ত্রের সপক্ষে যে সামান্য কয়েক পঙক্তি বিবেকবাণী উচ্চারিত হয়েছে, পাকিস্তানের জঙ্গী সরকার তা প্রসন্ন চিত্তে গ্রহণ করতে পারেনি। কেন না, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত পাকিস্তানী হাইকমিশনার উক্ত সম্মেলনে বাংলাদেশ সমস্যা আলোচিত হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশে পাকিস্তানী জল্লাদ বাহিনীর নৃশংস অত্যাচারের কঠোর সমালোচনার মধ্যে দিয়ে পূর্বদিন সপ্তদশ কমনওয়েলথ পার্লামেনটারী সমিতির সপ্তাহব্যাপী সম্মেলন শুরু হয়। সাবেক কমনওয়েলথ সচিব মিঃ আর্থার বটমলী ইয়াহিয়া খানকে এই সত্যটি উপলব্ধি করতে বলেছেন যে, একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানই পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে কথা বলতে পারেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তি দাবী করে বলেন, জন নেতাদের কারাগারে রেখে দুনিয়ার কোন সমস্যার যে সমাধান করা যায় না বৃটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাস থেকে ইয়াহিয়ার শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। মিঃ বটমলী তার ভাষনে বাংলাদেশ সমস্যা অধিকৃত বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের অভিজ্ঞতার উপর আলোকপাত করেন। ইয়াহিয়া খান সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন যে, ইয়াহিয়া খান রাজনৈতিক নেতা নন। অথচ তাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে নির্ভেজাল রাজনৈতিক সমস্যার। উক্ত অধিবেশনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা শ্ৰী জি, এস ধীলন বাংলাদেশের প্রশ্নে বলেন যে, বর্তমান সংকট ভারত পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধের ফল নয়, সংস্কৃতি ও ভাষার দিক দিয়ে পাকিস্তানের দুইটি ভিন্ন জাতির মধ্যকার বিরোধ।