পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

67 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড ভারতের প্রেসিডেন্ট গিরি এক বাণীতে সম্মেলন বাংলাদেশ প্রশ্নে আন্তর্জাতিক বিবেক জাগ্রত করতে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। শ্ৰী নারয়ণ সম্মেলনে বক্তৃতা প্রসঙ্গে বলেন যে, বিশ্ব আজ অবহিত যে, লাখো শহীদের লাশের নীচে পাকিস্তান চাপা পড়ে গেছে। তিনি বলেনঃ একমাত্র মুক্তিবাহিনী সফলতার ওপরই বাংলাদেশের জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব। অন্য দিকে মুক্তিবাহিনীর সফলতা বিশ্বের সকল দেশের জনগণ ও সরকারের সর্বিক সহায়তা ও সাহয্যের ওপর নির্ভরশীল। সম্মেলনে বেসরকারীভাবে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ এ, আর মল্লিক। তুমূল করতালির মধ্যে কায়রোর আল আহরাম পত্রিকার সম্পাদক ডঃ মাকসুদ বলেন, বাংলাদেশে বৃটিশ এম,পি, এবং ওয়েলসে সর্বদলীয় বাংলাদেশ কমিটিার চেয়ারম্যান মিঃ ফ্রেড ইভান্স বলেন যে, বাংলাদেশে গণহত্যা বিনা বাধায় চালিয়ে যেতে দেয়া হলে আমরা অচিরেই উপলদ্ধি করতে পারবো যে আমাদের নিজেদের স্বাধীনতাও বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সিংহলে বাংলাদেশ মানবিক অধিকার কমিটির চেয়ারম্যান স্যার সেনারেট গুনাওয়ার্ধন বলেন যে, বাংলাদেশের গণত্যার ব্যাপারটি জাতিসংঘে যথার্থভাবে আলোচিত হওয়ার যোগ্যতা রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিঃ ষ্টেনলি প্লাস্ট্রিক বলেন, বাংলাদেশে গণহত্যা এবং অকল্পনীয় নিষ্ঠুরতার নিন্দা জ্ঞাপন নিক্সন সরকারের কাছ থেকে আশা করা ভূল হবে। তিনি বলেন, তবে আশার কথা হচ্ছে আমেরিকার যুব সমাজ, ছাত্র সমাজ, বুদ্ধিজীবী সমাজ বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে রয়েছেন। ফ্রান্সের মিঃ ডানিয়েল মেয়র বলেন, বাংলাদেশ সমস্যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ব্যাপার নয়। বাংলাদেশ সমস্যা হচ্ছে পাকিস্তানের সাথে বিশ্ববিবেকর। বাংলাদেশে গণহত্যার জন্য যুগোশ্লাভ শান্তি লীগের মিঃ জোভরেমেভিক বলেন সমসাময়িক ইতিহাসে বাংলাদেশ ট্রাজেডির কোন নজির নেই। বৃটেনের বিশ্ব কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির ডিরেক্টর স্যার বলেন, বাংলাদেশে মানবিক মূল্যবোধ এবং গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষার যাতে সমাধি না ঘটে তা দেখার দায়িত্ব বিশ্বের প্রতিটি মানুষের । আফগান মিল্লাত’-এর সম্পাদক জনাব কিউ, হাদাদ, আফ্রো-এশীয় সংহতি কাউন্সিলের নাইজেরীয় শাখার সদস্য মিঃ গনি ফাওয়হিনমি, টোকিওর অধ্যাপক নারা, সালভাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার ইসমাইল কুইলেম, অটোয়ার বিশ্ব কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মিঃ নিয়েলমল, অসলোর মিসেস মিগরিড এবং বিশ্ব ধর্মীয় শান্তি সম্মেলনের সেক্রেটারী জেনারেল ডঃ হোমার জগক সম্মেলনে বক্তৃতা প্রসঙ্গে পাকিস্তানী জল্লাদ বাহিনীর নাদিরশাহী বর্বরতার নিন্দা করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত সংগঠিত করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন। অন্যান্যদের মধ্যে ভারতের বিশিষ্ট জননেতা মেসার্স সাদিক আলী, আচাৰ্য্য কৃপালনী, সুচেতা কৃপালনী, বিজয় লক্ষী পণ্ডিত, অধ্যাপক রাঙ্গা এবং শাহ নওয়াজ সম্মেলনে যোগদান করেন।