পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

78 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাপত্র তারিখ ংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও জয় বাংলা ১২ নভেম্বর, জাতীয় পুনর্গঠন ১ম বর্ষঃ ১৬শ সংখ্যা Ջի, Գ Ֆ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও জাতীয় পুনর্গঠন ! অর্থনৈতিক ভাষ্যকার !! পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে বাংলাদেশের অবশিষ্ট দখলীকৃত এলাকার মুক্তির কাল আসন্ন বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনের খবর থেকে এমন একটি প্রত্যাশা সকলের মনেই জেগেছে। দেশপ্রেম, আত্মবিশ্বাস ও উন্নততর রণকৌশল এবং দেশের মাটির সঙ্গে নাড়ীর সংযোগই মুক্তিবাহিনীকে চূড়ান্ত বিজয়ের তোরণদ্বারে পৌছে দিতে পেরেছে। তবে রণাঙ্গনের খবর নয়, বর্তমান নিবন্ধে আমরা আলোচ্য বিষয় স্বতন্ত্র। মাতৃভূমির আসন্ন মুক্তি সম্ভাবনাকে সামনে রেখে যে প্রশ্নটি ইতিমধ্যেই অনেকের মনে জাগছে তা হচ্ছে হানাদার বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ ও যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে কত দ্রুত পুনর্গঠন করা যাবে এবং পুনর্গঠনের জন্যে আমাদের কোন বস্তটির প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী। একটি মাত্র বাক্যে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া যায়। জনগণের দেশপ্রেম ও সর্বস্তরে পূর্ণ ঐক্যই দ্রুত পুনর্গঠনের প্রাথমিক শর্ত। মুক্তি সংগ্রামকে চূড়ান্ত বিজয়ের পথে নিয়ে যাবার জন্যে উপরোক্ত দুটি উপাদানের যেমন প্রয়োজন হয়েছিল, জাতীয় পুনর্গঠন ও দেশকে দ্রুত সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্যেও ওই দুটি উপাদানের প্রয়োজন তার চেয়ে কিছু কম নয়। ওটা মুক্তি সংগ্রামের সফল পরিসমাপ্তিরই যুক্তিসঙ্গত পরবর্তী ধাপ। জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম দেশের মানুষকে যেমন উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছে তেমনি অর্থনৈতিক ন্যায়নীতি ও সম্পদের সুষম বন্টন দেশের মানুষের জাতীয় পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করতে সমর্থ হবে। আওয়ামী লীগের ম্যানিফেষ্টো ও খসড়া কর্মসূচীতে তার সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কাজেই জাতীয় পূর্ণর্গঠনের জন্যে যে মানবিক উপাদানগুলোর প্রয়োজন সেই উপাদানের কোন অভাব যে হবে না যে সম্পর্কে আমরা স্থির নিশ্চিত। কিন্তু মানবিক উপাদান ছাড়াও যে অর্থনৈতিক সম্পদ ও সংঙ্গতির প্রশ্ন এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে স্বাধীনতা পরবর্তী অধ্যায়ে জাতীয় পুণর্গঠনের ব্যাপারে সে সম্পর্কেও বিশেষভাবে আলোচনা করার এ প্রসঙ্গটির সার্থক আলোচনার পূর্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে প্রথমে আলোচনা করে নেবার প্রয়োজন রয়েছে। এ সম্পর্কে ইতিপূর্বেও বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু আলোচনা যে না হয়েছে তা নয়, তবু জাতীয় পুণর্গঠনের প্রশ্নকে সামনে রেখে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও কিছু আলোচনার অবকাশ আছে। কিছু কিছু মানুষ এখনও আছেন যারা অনেক সময় প্রশ্ন করেন যে, আমাদের এই রাষ্ট্রের ছোট্ট পরিসরে অগুনতি মুখে খাদ্যের জোগান দিতে হবে। কাজেই এই দেশের পক্ষে অর্থনৈতিক দিক থেকে টিকে থাকা ও এগিয়ে যাওয়া কি সম্ভব হবে? এ প্রশ্ন যারা করেন তারা হয় অধুনালুপ্ত পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ইতিহাস জানেন না, নয়তো মানসিক দিক থেকে পুরোপুরি সংশয়বাদী। তাঁরা পাকিস্তানের বিলুপ্তির পূর্বেকার অর্থনৈতিক বিন্যাসকে সাধারণ দৃষ্টিতে দেখেছেন কিন্তু তার কার্যকারণ এবং তাৎপর্য অনুধাবন করার চেষ্টা করেননি। তা