পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

80 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরনাম সংবাপত্র তারিখ মোনেমের ভাগ্য সব দালালকেই জয় বাংলা ১২ নভেম্বর, ১৯৭১ বরণ করতে হবে ১ম বর্ষঃ ২৭শ সংখ্যা মোনেমের ভাগ্য সব দালালকেই বরণ করতে হবে মসনদের লোভে পড়ে যে মীর জাফর আলী খান পলাশীর আম্রকাননে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার স্বাধীনতা বিকিয়ে দিয়েছিল ইতিহাসে কুখ্যাত হয়ে থাকলেও মৃত্যুর পরে সে বাংলারই মাটিতে শায়িত থাকার সুযোগ পেয়েছিল। এর ফলে মৃত্যুর পরেও সে বাংলাদেশের পবিত্র মাটিকে অপবিত্র করার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ংলার লাটগিরির আশায় যে কুখ্যাত মোনেম খান বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের সাথে বেঈমানী করেছে এমনকি লাথি মেরে গদি হারাবার পরও জীবনের শেষ মুহুর্তে পর্যন্ত সাত কোটি বাঙালীকে পরাধীনতার জিঞ্জিরে আবদ্ধ রাখার প্রয়াস পেয়েছে, আজিকার বাঙালী সমাজ তাকে কোনদিনও ক্ষমা করতে পারে না। বাঙালী বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ষ্টেনগানের গুলীতে কুকুরের মত হত্যা করেছে। মোনেমের আত্মীয়রা ভেবেছিল ওখানেই সব কিছুর শেষ। মৃত্যুর পরে অন্তত মোনেম খান বাংলার মাটিতে শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকতে পারবে। তাই তারা জায়গা কিনে আজিমপুরায় নয়া গোরস্তানে তার লাশ সমাহিত করেছিল। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল যে বাঙালী তরুণরা মৃত্যুর পরও মোনেম খানকে ক্ষমা করতে পারে না, তাকে বাংলার মাটি অপবিত্র করতে দিতে পারে না। মোনেমের আত্মীয়রা আরো ভুলে গিয়েছিল যে, এই আজিমপুরা গোরস্তানেই শায়িত রয়েছেন ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদান বরকত, সালাম ও রফিক। আরো রয়েছেন বঙ্গবন্ধুর দক্ষিণ হস্ত সৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক জনাব তফাজ্জল হোসেন (মানিক মিয়া) এবং আজীবন সংগ্রামী জনাব আবু হাসেন সরকার প্রমুখ। তাই, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা হাজার হাজার পশ্চিমা সৈন্য ও তাদের দালালদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে রাতের বেলায় মোনেম খানের লাশটি গোরস্তান থেকে তুলে নিয়ে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। প্রকাশ, মোনেম খানের অপবিত্র লাশ তুলে নেওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে একখানা কাগজে কতিপয় কথা লিখে রেখে গেছেন। তাতে লেখা হয়েছে, অন্যান্য দালালদেরও মোনেমেরই দশা হবে। তাদেরকে কুকুরের মত হত্যা করা হবে। তারপর তাদের লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হবে বা শিয়াল-কুকুরের উদরপূর্তির কাজে লাগান হবে যাতে মৃত্যুর পর তারা বাংলার মাটিকে অপবিত্র করতে না পারে।