পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

121 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ রাজাকারাও আর বিশ্বাসী নয় বাংলাদেশ ১ নভেম্বর, ১৯৭১ ১ম বর্যঃ ১৯শ সংখ্যা রাজাকাররাও আর বিশ্বাসী নয় ঢাকা ২৮শে অক্টোবর-এক জেলার রাজাকারদেরও অন্য জেলায় ব্যাপকভাবে বদলি করেও মুক্তিবাহিনীর মোকাবিলা করবার কাজে নিয়োগ করতে পাক হানাদাররা উঠে পড়ে লেগেছে। পাকবাহিনী শহর, গ্রাম, গঞ্জ থেকে সক্ষম লোকদের এক বিশেষ আদেশ বলে সামরিক ছাউনীতে নিয়ে গিয়ে মোটামোটি গোছের একটা প্রশিক্ষণ দিয়ে রাজাকার বাহিনীতে শামিল হতে বাধ্য করছে। জানা গেছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ প্রভৃতি জেলা থেকে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত রাজাকারদের রংপুর দিনাজপুর প্রভৃতি এলাকায় প্রেরণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জনৈক নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তির ধারনা দলে দলে মুক্তিবাহিনীর হাতে রাজাকাদের আত্মসমর্পনের ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বনের জন্যই এক জেলার লোকদের অন্য জেলায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর হাতে ধৃত বেশ কিছু সংখ্যক রাজাকারদের মধ্যে বিভিন্ন জেলার লোক দেখা গেছে। ধৃত রাজাকারদের কাছ থেকে জানা গেছে যে, পাকবাহিনী এক ফতোয়া জারী করে তাদের রাজাকার বাহিনীতে প্রবেশ করতে বাধ্য করছে। জনৈক রাজাকার বলেন যে, অনেকে মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধাচারনের ভূমিকা প্রদর্শন করেও রাজাকার বাহিনীতে যোগ দিচ্ছে কারন এর ফলে অতি সহজে যদি প্রাণে বেঁচে থাকা যায় তাহলে অস্ত্ৰ শস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসপনের নামে মুক্ত জীবনের অধিকারী হওয়া সম্ভব হচ্ছে। উল্লেযোগ্য, এত সাবধানতা সত্ত্বেও খানসেনারা রাজাকারদের আত্মসমর্পণ আটকাতে পারছে না। কারন জেলাব্যাপী ব্যাপকভাবে বদলী করেও রাজাকারদের মানসিক গতিকে অর্থাৎ বাঙালীর বাংলাদেশ প্রীতিকে ঠেকিয়ে রাখতে পারছে না যদিও ব্যতিক্রম কিছু বিশ্বাসঘাতক ক্ষমতালোভী ইয়াহিয়া তাঁবেদার।