পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

148 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় স্বাধীন বাংলা ১৯ সেপ্টেমবর, ১৯৭১ শুভ সূচনা ১ম বর্যঃ ১১শ সংখ্যা সম্পাদকীয় শুভ সূচনা গত সপ্তাহে পাঁচটি সংগ্রামী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সমবায়ে মন্ত্রিসভার পরামর্শদাতা কমিটি গঠন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে নয় অধ্যায়ের সূচনা করিয়াছে পরামর্শদাতা কমিটিতে বাংলাদেশ সরকার ও আওয়ামীলীগের দুই জন করিয়া এবং কমিউনিষ্ট পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (সভাপতি অধ্যাপক মোজফফর আহমদ) জাতীয় কংগ্রেস ও ভাসানী ন্যাপের একজন করিয়া প্রতিনিধি অন্তৰ্ভূক্ত হইয়াছেন। এই কমিটি গঠনের ফলে বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির সংগ্রামে নিয়োজিত সকল সংগ্রামী দল ও শক্তির সমান অংশীদারিত্বেও মনোভাব নিশ্চিত হইবে এবং বিভিন্ন দল ও শক্তির কার্যকলাপের মধ্যে সমন্বয় বিধানের মাধ্যমে মুক্তিসংগ্রামের আরও সুষ্ঠু পরিচালনা সম্ভব হইবে। সর্বোপরি, সংযুক্ত কমিটি হইল জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে বাংলাদেশের সমগ্র জনগণের জঙ্গী একতার প্রতীক। আমরা এই কমিটি গঠনকে মুক্তি সংগ্রামের দ্রুত ও নিশ্চিত বিজয়ের পথে একটি সঠিক পদক্ষেপ বলিয়া মনে করি এবং ইহাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাইতেছি। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সকল সংগ্রামী দল ও শক্তির মধ্যে একতা গড়িয়া তোলার প্রয়োজনীয়তা অধিক বলার অপেক্ষা রাখে না। কমিউনিষ্ট পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি প্রথমাবধি সকল সংগ্রামী দল ও অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত মুক্তি ফ্রন্টের উপযোগী একটি খসড়া নিম্নতম কর্মসূচীও হাজির করিয়াছে। অত্যাবশ্যকীয় শর্তস্বরূপ এই একতা গড়িয়া তোলার কাজ এতদিন অগ্রসর হইতে পারে নাই। এখন জনমতের চাপ ও মুক্তি সংগ্রামের বাস্তব অভিজ্ঞাতা হইতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা উপলদ্ধি করিয়াছেন। আলোচ্য পরামর্শদাতা কমিটি জাতীয় মুক্তিফ্রন্টের সমর্থক বা সমপর্যায়ের না হইলেও ইহা নিঃসন্দেহে সঠিক পথে এক ধাপ অগ্রগতি এই কমিটি গঠনের ফলে একতার প্রয়োজনীয়তা স্বীকৃত হওয়ার সাথে সাথে উহার একটা প্রাথমিক ভিত্তিও স্থাপিত হইয়াছে। ইহাকে দিন দিন আরও প্রসারিত ও আরও উন্নত করিয়া নিতে ইহবে এবং উহার সম্ভাবনাও রহিয়াছে। সর্বদলীয় ভিত্তিতে মন্ত্রিসভার পরামর্শদাতা কমিটি গঠিত হওয়ার ফলে দেশবাসীর সংগ্রামী উদ্দীপনা আরও বৃদ্ধি পাইবে এবং মুক্তিবাহিনী ও অন্যন্য মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও বাহুবল বহুগুনে বাড়িয়া যাইবে। বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকার বেসামরিক গভর্ণর নিয়োগ সাধারন “ক্ষমা” ঘোষণা প্রভৃতি দ্বারা দেশের ও বিদেশের জনগণকে দূর্বল ও বিভ্রান্ত করার যে সুচতুর কৌশল জল্লাদ ইয়াহিয়া -চক্র অবলম্বন করিয়াছে, উহাকে নস্যাৎ করার ব্যাপারে সংযুক্ত কমিটি বিশেষ কার্যকর হইব। আন্তজাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মিত্রবর্গ বিশেষ সমাজতান্ত্রিক শিবির এবং সম্রাজ্যবাদ বিরোধী প্রগতিশীল রাষ্ট্রবর্গ ও গণতান্ত্রিক শক্তিসমুহের অধিকতর সাহায্য সমর্থন লাভেও ইহা খুবই সহায়ক হইবে। এ সব দিক দিয়া এই সংযুক্ত কমিটি গঠনে তাৎপর্য সুদুর প্রসারী বলিয়া আমরা মনে করি। দেশবাসী একান্তভাবে আশা করেন যে, এই কমিটি নিছক কাগজে-পত্রে সীমাবদ্ধ না থাকিয়া সংগ্রামী শক্তিগুলির ঐক্য ও সমন্বয়ের কার্যকর হাতিয়ারে পরিনত হউক। এতদিন সংগ্রামের ক্ষেত্রে যে সকল অসুবিধা