পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

157 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শ্রেণীর অবাধ শোষণের মৃগয়া ক্ষেত্র হইয়া উঠিবে না, স্বাধীন বাংলাদেশে যে সত্যই সুখী সমৃদ্ধিশালী সমাজ গড়িয়া তোলা হইবে- এই আশ্বস ও নিশ্চয়তা দেশবাসীকে দিতে হইবে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে পাকিস্তানের তৎকালীন অবস্থার পটভূমিতে অনেক ইতিবাচক বিষয় সন্নিবেশিত হইলেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পটভূমিতে উহার রদবদল অত্যাবশ্যক। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, আওয়ামী লীগের কর্মসূচীতে সাম্রাজ্যবাদী শোষণ বন্ধকরা ও কৃষকের স্বার্থে ভূমি ব্যবস্থার সংস্কার সম্পর্কে কোন উল্লেখ নাই। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের পুনগঠনের ক্ষেত্রে এই দুই বিষয়েই হইবে মূখ্য। কাজেই পরিবর্তিত অবস্থার চাহিদার সহিত সঙ্গতি রাখিয়া সর্বদলীয়ভাবে স্বীকৃত একটি গণমুখী কর্মসূচী বাংলাদেশ সরকারের তরফ হইতে ঘোষণা করা একান্ত অবশ্যক হইয়া পড়িয়াছে। ইয়াহিয়া চক্রের পাক-ভারত যুদ্ধের হুমকির দরুন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ক্ষেত্রে নয়া পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে এই পরিস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে অগ্রসর করিয়া নেওয়ার জন্য উপদেষ্টা পরিষদের সামগ্রিক ও ঐক্যবদ্ধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। ইয়াহিয়া-চক্র যদি মরিয়া হইয়া যুদ্ধ বাধায়ই তাহা হইলেও শক্রযেন পাক-পাকত যুদ্ধের মধ্যে দিয়া বাংলাদশের স্বাধীনতার প্রশ্নটিকে চাপা দেওয়ার কুমতলব হাসিল করতে না পারে বরং বাংলাদেশে উহার পরাজয় তুরান্তিত হয় সে জন্য বাংলাদেশের সকল সংগ্রামী শক্তিকে প্রস্তুত থাকিতে হইবে। বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী এবং সাড়ে সাত কোটি নর-নারী যেন একটি মানুষের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ ও ক্ষিপ্রতার সহিত শত্রর উপর ঝাপিয়া পড়িতে পারে সে জন্য একটি সামগ্রিক অভু্যত্থানের পরিকল্পনা তৈরী করা দরকার। উপদেষ্টা পরিষদের সামনে ইহাও আজ একটি মূখ্য করণীয় হিসাবে হাজির হইয়াছে। এ ব্যাপারে কালবিলম্ব করা চলে না।