পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

168 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড কোন কোন মহল মনে করেন এবং অনেক সময় প্রকাশ্যে বলিয়াও থাকেন, আগে তো দেশ স্বাধীন হউক, তারপর কর্মসূচীর কথা ভাবিয়া দেখা যাইবে। আবার কোন কোন মহল মনে করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আসুক, তা হইলেই সব সমস্যার সমাধান হইয়া যাইবে। কিন্তু এগুলি হইল শোষকশ্রেণীর যুক্তি। ১৯৪৬ সালে বলা হইয়াছিল, পাকিস্তান হাসিল হইলেই সব শোষণের অবসান হইবে। কারণ সব মুসলমান ভাই ভাই। আবার কেহ কেহ বলিতেন, মুসলমানদের মধ্যে জমিদার বা বড় পুঁজিপতি বিশেষ কেন নাই, কাজেই পাকিস্তান কায়েম হইলে উহা হইবে গরীবের পাকিস্তান’। এইসব যুক্তি’ যে ধোঁকাবাজি ছাড়া কিছু নয়, তা আজ আর কাহাকেও বলিয়া বুঝাইতে হয় না। কাজেই সব বাঙালী ভাই ভাই শ্লোগানও কোন কাজের কথা নয়। স্বাধীনতার দাবীতে সকল বাঙালী এক হইলেও বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব রহিয়াই গিয়াছে। কাজেই বাংলাদেশে যাহাতে প্রকৃতই শ্রমিক কৃষক বুদ্ধিজীবী তথা মেহনতি জনতার ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা পায় উহার নিশ্বয়তা সংবলিত একটি সামাজিক অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের কর্মসূচী অবিলম্বে ঘোষণা করা দরকার। এবং এই কর্মসূচীর রূপরেখার ভিত্তিতেই আদর্শ হিসাবে গড়িয়া তুলিতে হইবে মুক্তাঞ্চলগুলিকে। শুধু সামাজিক ন্যায়নীতির খাতিরেই নয়, শ্রমিক কৃষক জনতাকে অধিকতর অনুপ্রাণিত করিয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে আরও দুর্বার করিয়া তোলার জন্য ইহা অত্যাবশক।