পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

189 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাপত্র তারিখ বাংলাদেশ ও বিশ্ব বিবেক ংলার মুখ ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ ১ম বর্ষঃ ৬ষ্ঠ সংখ্যা আজকের সংগ্রামী বাংলাদেশ ও বিশ্ব বিবেক দি ইকনমিস্ট পত্রিকার চলতি সংখ্যায় বলা হয়েছে যে, অবশেষে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কিছু একটা করলেন। গত সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর টিক্কা খানকে পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছেন এবং তার দায়িত্ব বাঙালী বেসামরিক ব্যক্তি ডাঃ আব্দুল মালিক গভর্নর হিসাবে ও জেনারেল আমীর নিয়াজী সামরিক প্রশাসক হিসাবে ভাগ করে নেবে। একজন সরকারী মুখপাত্র বলেছেন যে, “সেনাবাহিনী এখন বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থাকে কেবল সাহায্য করছে”। এবং রোববার ১লা মার্চ হথে ৫ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে যারা অপরাধ করেছিল তাদের ব্যাপক ক্ষমা প্রদর্শন করেছেন। অপ্রকাশিত সংখ্যক আটক বাঙালী পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ বহু ব্যক্তিকে মুক্তিও দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা মিঃ ভূট্টো যিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপন সজাতিতে আক্রমণ রচনা করেছে, বলেছেন যে, একজন অসামরিক গভর্ণর নিয়োগ লোক দেখানো মাত্র। অবশ্য এ মন্তব্য কতখানী সত্য এখন বলা কঠিন। ডাঃ মালিকের মন্ত্রিপরিষদে মুজিবের আওয়ামী লীগের সদস্য গ্রহণ এবং সামরিক কর্তৃপক্ষ তাকে কতখানি ক্ষমতা ব্যবহারের সুযোগ দেবে তার ওপরই নির্ভর করবে অনেকখানি। ডাঃ মালিক মনেপ্রাণে বাঙালী নন, ১৯৬৯ সালে ইয়াহিয়ার মন্ত্রিপরিষদে কাজ করার ফলে অধিকাংশ বাঙালী তাকে সন্দেহের চোখে দেখতো। পত্রিকাটিতে আরও বলা হয় যে, নতুন বেসামরিক শাসনকর্তা যদি সাচ্চা হন তাহলে তার এ ভয় দুর করা উচিত যে সাহায্য সামগ্রী সেনাবাহিনী মুক্তিফৌজের প্রতি বাঙালীদের সমর্থন নষ্ট করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান অবশ্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু একটা দাতব্য প্রতিষ্ঠান, অপারেশন ওমেগা, সরকারকে তাদের সামগ্ৰী দিতে সাহস পাচ্ছে না। এবং তাই তারা পূর্ব পাকিস্তান সীমান্তে নিজেরাই গিয়ে কাজ করতে সচেষ্ট হয়েছে। গত মাসে এদের ফেরত পাঠানো হয়েছিল। রোববার এবং চারজন সদস্য প্রোটিনযুক্ত খাদ্যাদি নিয়ে আবার পূর্ব পাকিস্তানে ঢোকার চেষ্টা করতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পত্রিকাটি মন্তব্য করে যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া এই পন্থা গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন কারণে। মার্কিন অস্ত্র অনুরোধ করতে হবে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের থেকেও সবার দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু আসল ব্যাপার রয়ে যাবে ভারতে আগত ৮৫ লক্ষ শরণার্থীর প্রত্যাবর্তন ও মুক্তিফৌজের ংগ্রাম থামার পর। বৃটিশ গিয়ানার বিরোধীদল পিপলস প্রোগ্রেসিভ পার্টির নেতা ডঃ চেণ্ডি জগলের স্ত্রী ও উক্ত দলের আন্তর্জাতিক সংক্রান্ত বিষয়ের সেক্রেটারী মিসেস জালে জগল বলেন যে, ভারত উপমহাদেশে মানবিক দুর্দশার যে কাহিনী প্রকাশিত হচ্ছে তার গুরুত্ব পশ্চিম দেশগুলো উপলব্দি করতে পারেনি। তিনি ফোরবেস বানটাহম সরকারকে এ ব্যাপারে ব্যর্থতার জন্য তীব্র সমালোচনা করেন। এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, এ মুহুর্তে গিয়ানার উচিত ভারতে আগত ৮০ লক্ষ শরণার্থী প্রত্যাবর্তনের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থা স্বাভাবিক করার নিমিত্তে পাকিস্তান সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা ও বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে সাহায্য করা।