পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

220 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড জনসাধারণের শোষণমুক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের হৃৎপিণ্ডস্বরূপ। স্বাধীনতার সঙ্কল্পের প্রথম মুহুর্তেই শুধু বাঙালী নয়, দুনিয়ার লোক শুনেছে সেই বজ্রকণ্ঠঃ আমাদের সংগ্রাম, শোষিতজনের সংগ্রাম, দুনিয়ার শোষিতজনের মুক্তির সংগ্রাম। শোষণের স্পর্শমাত্রও যদি এই সংগামে থাকত তবে সারা দুনিয়ার লোকবাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের একান্ত আন্তরিক সহায়তা জ্ঞাপন করত না। তারা ভাবত, এ লড়াই বুঝি ক্ষমতার লড়াই, পশ্চিম পাকিস্তানী ধনিক-ভূস্বামীর সঙ্গে বাঙালী ধনিক-ভূস্বামীর লড়াই। কিন্তু মুক্তি সংগামের এ কয়েকমাসের সংগামে যুদ্ধক্ষেত্রে কোথাও স্বার্থবৃদ্ধির, লোভের, ক্ষমতার আকাঙক্ষার প্রাকাশ ঘটেনি। তাই দেশে বাঙালী এবং বিদেশে জনসাধারণ এবং শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবীরা বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামকে প্রকৃতই শোষণমুক্তির সংগ্রাম বলে গ্রহণ করেছে এবং অকুণ্ঠ সমর্থন করেছে। আজ সারাদেশ জোড় এই সংগ্রাম দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হচ্ছে। এই পদক্ষেপ আরও বলিষ্ঠ, আরও দ্রুত হবে-কিন্তু পদে পদেই আমাদের-সাধারণ সৈনিক যাঁরা তাঁদেরও, নেতৃস্থানীয় যাঁরা তাঁদেরও-প্রমাণ দিতে হবে ংলাদেশের ও দুনিয়ার জনসাধারণের কাছে যে এ যুদ্ধ শোষণ শেষের, এ যুদ্ধের তরবারি শোষণমুক্তির পবিত্র আদর্শ শাণিত এবং তাই দুর্বার। এ সংগ্রাম ক্ষমতার লড়াই নয়, নতুন আরেক শোষণের প্রতিষ্ঠার প্রয়াস নয়। সহস্ত্রের আত্মদানের আহুতি উজ্জ্বল এই আগুনে স্বার্থবৃদ্ধি বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশ হবে মুক্ত। তাই লক্ষ মানুষের এই আমৃত্য পণ, অপূর্ব আত্মদান।