পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

286 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শফিকুল আলম বসিরহাট 33 যে সামন্য কয়েকজন আওয়ামী লীগ দলীয় পরিষদ সদস্য বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া শত্রর সঙ্গে হাত মিলাইয়াছে স্বাধীন বাংলায় তাদের স্থান হইবে কোথায়? উঃ- কবরে। ৩রা জানুয়ারী ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই জনগণের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ প্রদান করিয়াছেন। নির্বাচিত সদস্যদের যদি কেউ দেশ ও দেশবাসীর সঙ্গে বেঈমানী করে তাকে জ্যান্ত কবর দিয়া দিও। সেলিনা আখতার সিলেট। প্রঃ- বিদেশে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশের জনগণের সব চাইতে বড় বন্ধু এবং সব চাইতে বড় দুশমন কে? উঃ- সব চাইতে বড় বন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী আর সব চাইতে বড় দুশমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিক্সন। কুষ্টিয়া। প্রঃ- আমি একজন ছোট দোকানদার। বাংলাদেশ স্বাধীন হইলে কি আমার ভাগ্য পরিবর্তিত হইবে? উঃ- বাঙ্গালী জাতির ভাগ্য তো সুখে দুঃখে একই সূত্রে গাঁথা। সুতরাং আপনার একার ভাগ্য পরিবর্তনের প্রশ্ন তো অবান্তর। সামগ্রিকভাবে জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই তো এত রক্তপাত, এত ত্যাগ তিতিক্ষা- এই স্বাধীনতার সংগ্রাম। জনৈক মুক্তিযোদ্ধা ফরিদপুর। প্রঃ- হাজার হাজার বাঙ্গালী যখন অস্ত্র লইয়া শক্রর সঙ্গে যুদ্ধ করিতেছে, তখন আপনারা রণাঙ্গন হইতে দূরে নিরাপদ আশ্রয়ে বসিয়া কাপুরুষের মত কলমবাজি করিতেছেন। লজ্জা করে না আপনাদের। উঃ- না। আপনার মত আমাদের যে সব বীর ভাই বন্ধু জীবনের ঝুঁকি লইয়া রণাঙ্গনে শক্রর মোকাবিলা করিতেছেন তাদের অবদানের কোন তুলনা নাই। তবে একটা কথা, কলমবাজি করিতেছি ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়- দেশ ও নেতার আদর্শের বাণী প্রচারের প্রয়োজনে। মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারামুক্তি এবং জননী বাংলার শৃঙ্খল মোচনের সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যেই আপনারা যেমন সমরাস্ত্রের সাহায্যে যুদ্ধ করিতেছেন, আমরা কলমের সাহায্যে লড়াই করিতেছি। আপনারা এবং আমরা একই যুদ্ধের দুই পৃথক ফ্রন্টের সৈনিক। একই ‘হাই কম্যাণ্ডের নির্দেশ অনুযায়ী যুদ্ধের প্রয়োজনেই আপনারা রণাঙ্গনে, আমরা পত্রিকা অফিসে। একই সংগঠনের আমরা সদস্য। আমাদের মধ্যে এ ধরণের ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ না থাকাই কি সমীচীন নয়? শ্ৰীকৃষ্ণ বাগদা। প্রঃ- ভুট্টো এখন কি করিতেছে? উঃ- পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ তার চুরমার হইয়া গিয়াছে। তাই বাংলাদেশের আশা ছাড়িয়া ‘নতুন পাকিস্তান গঠনের চেষ্টা-তদ্বিরে ব্যস্ত। আরেকটা ডিউটি আছে তার। ইয়াহিয়ার জুতা পালিশ করা।