পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

287 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় নতুন বাংলা ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ এই যুক্ত কর্মদ্যোগকে সংগ্রামের সকল | ১ম বর্ষঃ ৫ম সংখ্যা এই যুক্ত কর্মদ্যোগকে সংগ্রামের সকল স্তরে ছড়াইয়া দিন যুদ্ধকালীন অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দানের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণকারী দলগুলির এক বৈঠকে একটি সর্বদলীয় উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হইয়াছে। আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কমিউনিষ্ট পার্টি, মওলানা ভাসানী পরিচালিত ন্যাপ, জাতীয় কংগ্রেসের এই যৌথ উদ্যোগকে বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণ অভিনন্দন জানাইবে। সাধারণ শক্রর বিরুদ্ধে সংগ্রামের ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গঠন ব্যতীত সাফল্য অর্জন দুরূহ। বিশেষতঃ যেখানে আমাদের একটি সুশিক্ষিত ও আধুনিক অস্ত্র-সজ্জিত নিয়মিত সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করিতে হইতেছে। যেখানে লক্ষ্য এক সেখানে পৃথক পৃথকভাবে শক্রর বিরুদ্ধে লড়াই পরিচালনা সময় ও শক্তির অপচয়। শক্রকে বিভিন্ন ফ্রন্টে পর্যুদস্ত করার জন্য সমস্ত জাতির সহযোগিতা সকল দলের ঐক্যবদ্ধ কর্মদ্যোগের মধ্যে প্রতিফলিত হইবে, স্বাভাবিকভাবেই দেশবাসী ইহা আশা করিয়াছে। বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ সমন্বেয়ে গঠিত ৮ সদস্যবিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি তাহদের সেই আশা পুরা সংগ্রামী দেশবাসী ও বিভিন্ন দলের সাধারণ কর্মীগণ এইভাবে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে শামিল হইলেও প্রায় ছয় মাস যাবৎ শক্রর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত দলগুলি যার যার নিজস্ব পরিকল্পনা লইয়া শক্রর বিরুদ্ধে সাধ্যমত লড়াই করিতেছিল। সুনিশ্চিতভাবে বলা চলে সাধারণ শক্রর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সংগ্রামে আপন আপন পথে চলার নজীর দেশবাসী খুব ভাল চোখে দেখিতে পারে না। কারণ, সংগ্রামে জয়ের পথ ইহাতে অহেতুক জটিল ও দীর্ঘ হয়। পারস্পরিক সহযোগিতার স্থলে দেখা দেয় ভুল বুঝাবুঝি। শক্রর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট গঠনের কতিপয় পন্থা রহিয়াছে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দেখা গিয়াছে যে, বৃটেনের রক্ষণশীল মন্ত্ৰীসভায় শ্রমিকদলীয় সদস্যদের গ্রহণ করা হইয়াছে। এইভাবে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সকল মতের প্রতিনিধিস্থানীয় দলকে গ্রহণ করিয়া সাধারণভাবে নাজীবাদের বিরুদ্ধে তাহারা ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম চালাইয়াছে। মন্ত্রীসভায় বিভিন্ন দলকে গ্রহণ করিয়া মুক্তফ্রন্ট গঠন করা যাইতে পারে। দ্বিতীয় পন্থা হইল ঐক্যবদ্ধ জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন। ভিয়েতনাম, প্যালেষ্টাইন প্রভৃতি কোন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থনপুষ্ট ও সাহায্যপ্রাপ্ত চরম প্রতিক্রিয়াশীল সরকারের বিরুদ্ধে সংগমরত বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে এই রকম যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হয়। এই ধরণের যুক্তফ্রন্ট শক্রর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা হইতে মুক্ত এলাকায় শাসন ব্যবস্থা প্রভৃতি সংগ্রামের সকল স্তরে একটি সর্বোচ্চ পরিষদ হিসাবে কাজ করে। ইহার অধীনে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য থাকে সমর পরিষদ এবং মন্ত্রী পরিষদ। ইহা ছাড়া তৃতীয় একটি পন্থা রহিয়াছে। বিভিন্ন দলের কর্মপন্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং কিভাবে শক্রর বিরুদ্ধে অগ্রসর হইতে হইবে সে সম্পর্কে পরামর্শ দানের জন্য উপদেষ্টা কমিটি বা পরিষদ গঠন। উপদেষ্টা

  • নতুন বাংলা। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাপ্তাহিক মুখপত্র। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ( সভাপতিঃ অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ) কর্তৃক বাংলাদেশ হতে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।