পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

306 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার নতুন বাংলা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সমীপেযু ১ম বর্ষঃ ১৮শ সংখ্যা স্বাধীন বাংলাদেশে সরকার সমীপেযু আজ একথা আর বলিবার প্রয়োজন রাখে না যে-গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের আদর্শকে সমনে রাখিয়াই এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও যুবক স্বাধীনতার লড়াইয়ে জীবন দিয়াছে। জীবন ছাড়া যেমন জীব হয় না তেমনি গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র ছাড়া স্বাধীনতার কোন অথ্য হয় না। কৃষকরা বলাবলি করিতেছে এবারে তারা জমি পাইবে, পাটের ন্যায্য মূল্য পাইবে, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম কমিবে, ঘুষ রিশওয়াত ও অন্যান্য দুনীতির হাত হইতে মুক্তি পাইবে। শ্রমিক মনে করে সে তার বচার মত ন্যায্য মজুরি পইবে। ছাত্র ভাবে এবার তার লেখাপড়ার সুযোগ হইবে। যুবক মনে করে এবার তাঁর চাকুরীর সংস্থান হইবে। এক কথায় রিক্সাওয়ালা ক্ষেতমুজুর আপামর জনসাধারণ ভাবিতেছে-পারিব এবারে মানুষের মত বাঁচিতে কথা বলিবার অধিকার পাইব। মানুষকে মানুষের মত বাঁচিতে দেওয়া ও তাঁকে কথা বলিবার অধিকার দেওয়া এবং তার কথা মত কাজ করা এই-ই হইতেছে গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সারমর্ম। এই লক্ষ্যকে সামনে রাখিয়াই আজ আমাদের আগাইয়া যাইতে হইবে। গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রে বিশেষ করিয়া সমাজতন্ত্রে এক লাফে পৌছান যায় না তাই, আমাদের তিন পর্যায়ে কাজ করিয়া যাইতে হইবে। প্রথম পর্যায়ঃ আশু ব্যবস্থা ও কার্যাবলী ১। অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকারের স্বরূপ ক) বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অশগ্রহণকারী দলসমূহের প্রতিনিধিদের লইয়া সরকার গঠন করিতে হইবে। খ) রাষ্ট্রের প্রশাসন ব্যবস্থা প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং তাহার মন্ত্রিসভার সদস্যগণ পরিচলনা করিবেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে অশগ্রহণকারী দলগুলি কর্তৃক ইহারা মনোনীত হইবেন। গ) ক ধারায়া সুস্পষ্টভাবে ঘোষিত নীতি সরকারের সকল স্তরে অনুসরণ করিতে হইবে। ঘ) সরকারী পদস্থ কর্মচারী এবং স্বায়াত্তশাসিত, আধা-স্বায়াত্তশাসিত সরকারী সংস্থার পদস্থ কর্মচারী ও সাধারণ কর্মচরী এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য হইতে দালালদের বহিস্কারের জন্য উপযুক্ত স্ক্রনিং পদ্ধতি স্থির করিতে হইবে। ঙ) সকল স্তরে যেমন থানা, মহকুমা, জিলা, বিভাগ এবং জাতীয় স্তরে অন্তবর্তীকালীন সময়ে প্রশাসন পূর্বের মত চলিতে থাকিবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে পদস্থ কর্মচারী ও সাধারণ কর্মচারীদের কার্যনির্বাহ করিতে হইবে। চ) পাকিস্তান সরকারের সর্বপ্রকার দমনমূলক ও গণবিরোধী আইন, অর্ডিন্যান্স এবং সার্কুলার (ঘোষণা) প্রত্যাহার করিতে হইবে।