পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

309 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড গ) যুদ্ধাপরাধী ও দালালদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিয়া উহা রাষ্ট্রের নিকট গচ্ছিত রাখিতে হইবে। এইভাবে দখলকৃত গ্রাম্য কৃষিজমি ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিলিবন্টন করিতে হইবে। ১০। মুক্তিবাহিনী ক) জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণকে জাতীয় সম্মান বলিয়া স্বীকৃতি দিতে হইবে এবং মুক্তিবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেন তাহার এই দেশ সেবার উপযুক্ত স্বীকৃতি পান। খ) শিক্ষালাভের জন্য মুক্তিবাহিনী তরুণদের বিশেষ সুবিধা দিতে হইবে। গ) সাহসিকতার জন্য পুরস্কার দানের রীতি প্রচলন করিতে হইবে। ঘ) বর্তমানে মুক্তিবাহিনীতে যুদ্ধরত তরুনদের বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও মিলিশিয়াতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করিলে তাহাদের গ্রহন করিতে হইবে। ১১। জনস্বাস্থ্য ক) সকল হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ প্রসূতিসদন, গ্রাম ও শহরের শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবিলম্বে দিন রাত কাজ শুরু করিতে হইবে। খ) ঔষধ সরবরাহের প্রয়োজন মিটাইবার জন্য সকল ঔষধ প্রস্তুত শিল্পকারখানা কর্মক্ষম করিতে হইবে এবং অবশ্যই উৎপাদন চালু করিতে হইবে। ঘ) জীবন রক্ষাকারী ঔষধ আমদানীর জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা অবলম্বন করিতে হইবে। ১২। শাসনতান্ত্রিক সমস্যা ক) একটি অন্তবর্তীকালীন শাসনতন্ত্র গ্রহন করিতে হইবে। ১৩। সর্বদলীয় কমিটি ক) জেলা হইতে শুরু করিয় ইউনিয়ন স্তরে সকল পর্যায়ে সর্বদলীয় কমিটি গঠন স্থাপন করিতে হইবে। উপরে বর্ণিত লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্ত সরকারের প্রশাসনিক সংস্থাকে স্থানীয় সর্বদলীয় কমিটিগুলির সর্বাধিক সহযোগিতা ও পরামর্শ গ্রহন করা উচিত হইবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে স্বাধীন বাংলার রূপরেখা (১) যে এক কোটি দেশবাসী পাক সৈন্যের বর্বর অত্যাচারে তাহদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি ফেলিয়া প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারত ও বার্মায় আশ্রয় গ্রহন করিতে বাধ্য হইয়াছেন, তাহাদিগকে পূর্ণ মর্যাদার সহিত দেশে ফিরাইয় আনিতে হইবে। (২) বাংলাদেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে সকলেই স্পষ্টভাবে দেখিয়াছেন-আমেরিকা, চীন অন্যান্য কয়েকটি রাষ্ট্র আমাদের প্রতি দুষমনী করিয়া আসিতেছে। তাহদের ও তাহাদের এজেন্ট মুসলিম লীগ, জামাতে ইসলাম, নেজামে ইসলাম, পি-ডি-পি এবং চরম বামপন্থীদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সর্বদাই হুশিয়ার থাকিতে হইবে।