পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

322 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় মুক্তবাংলা ১ নভেম্বর, ১৯৭১ পাকিস্তানী সেনা ১ম বর্ষঃ ৭য় সংখ্যা নারী নির্যাতন ও আলেম সমাজ সম্পাদকীয় পাকিস্তানী সেনা নারী নির্যাতন ও আলেম সমাজ বাংলাদেশটি পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছিলো একমাত্র ধর্মীয় প্রবণতাকে গুরুত্ব দিয়েই। নইলে দ্বিতীয় কোন যুক্তি ছিলো না যদিও বাঙ্গালী মুসলমান সমাজ হানাফী মতাবলম্বী এবং পশ্চিম পাকিস্তান কাদিয়ানী, শিয়া,হানাফী, শাফেয়ী ও মালিকীদের আবাস ভূমি। ইসলাম ধর্মের কট্টর শক্রও স্বীকার করেছেন যে, নারীজাতিকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়েছেন ইসলাম ধর্ম। সাধারণ গৃহকোণ থেকে সিংহাসন পর্যন্ত নারীর মর্যাদা স্বীকৃত। মহাপুরুষ হযরত মুহম্মদ (দঃ) বাণী। সন্তানের রয়েছে নারী জাতিকে যথোপযুক্ত সম্মান দেওয়ার জন্য। নিজের বিবাহিতা স্ত্রী ব্যতীত অন্য নারী নিষিদ্ধ করা হয়েছে পুরুষের জন্য। পৈতৃক সম্পত্তিতে পুত্রসন্তানের মতো কন্যাসন্তানেরও ওয়ারিসী স্বত্ব স্বীকৃতি। একদা দিল্লীর সিংহাসনে দিল্লীর সিংহাসনে সম্রাজ্ঞী সুলতানা রাজিয়া ও দাক্ষিণাত্যের বিজাপুরে বীরাঙ্গনা চাঁদা সুলতানা তারি ফলশ্রুতি। হাল জামানায় অবশ্যি সভ্য জগতের সর্বত্রই নারী জাতির সম অধিকার স্বীকৃত। কিন্তু বাংলাদেশ ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত ডিক্টেটর ইয়াহিয়া খানের সৈন্যবাহিনী ইসলাম ধর্মের অবশ্য পালনীয় নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে বিভিন্ন শিবিরে অনূ্যন ২০ হাজার নারী আটক করে রেখেছে নিজেদের পার্শ্ব বাসনা চরিতার্থের উদ্দেশ্যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, চাকুরীজীবী মহিলা, কুলবধূ কেউই ওদের হিংস্র থাবা থেকে রেহাই পাননি। ইসলাম ধর্মের অনুশাসন বেপরোয়াভাবে অগ্রাহ্যকারী মুসলমান ধর্মীয় পরিভাষায় কাফের। এবং নারীজাতির সতীত্বের প্রতি সম্মান দেখানো ইসলাম ধর্মের একটি কড়া অনুশাসন। সুতরাং বাংলাদেশে আগত এই কাফেরদের বিরুদ্ধে কিন্তু আমাদের আলেম সমাজ আজ পর্যন্ত একটা টু-শব্দও উচ্চারণ করেননি। সম্প্রতি যে ভাগ্যহীন মেয়েগণ খান সেনাদের শিবির থেকে পরিত্যক্তা হয়েছে ওরা মৈথুনকার্যে অনুপযুক্ত, রোগে ভুগে জীৰ্ণশীর্ণ এবং গর্ভবতী। এবং সেই হেতু পরিত্যক্তা। ইহার পরিপ্রেক্ষিতে আলেম সমাজের প্রতি আমাদের জিজ্ঞাসাঃ ওই ভাগ্যহীনরা যদি আপনাদেরই স্ত্রী কন্যা পুত্রবধু হতো তাহলে আপনারা কী করতেন? অবশ্যি আমরা জানি আপনারা বসে নাই। ইয়াহিয়া খানের ঔপনিবেশিক শাসনকে বাংলাদেশে কায়েম রাখার জন্য দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন আপনাদের অনেকে। বর্তমান জগতের অন্যতম আশ্চর্য বস্তু বাংলাদেশের উপ-নির্বাচনী প্রহসনকে বাস্তবে পরিণত করার অপচেষ্টায় আপনারা গলদঘর্ম। কিন্তু আমরা ভুলিনি মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজিদ ইসলাম ধর্মের শ্রেষ্ট অবদান গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিলো আপনাদেরই