পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

349 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিশুদের প্রতিহিংসানোত্ত আহবান, স্বামীহারা লাঞ্চিতা নারীর করুণ আবেদন, ভূমিহারা বঞ্চিত লুষ্ঠিত কৃষকের উদাত্ত আহবান, সর্বহারা শ্রমিকের বজ্ৰকঠোর শপথ, সংগ্রামী ছাত্র যুবকের পবিত্র সংকল্প সমস্ত মুক্তিকামী রাজনীতিকদের ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা, “কে আছ বাংলার বীর সন্তান রক্ত নিতে হবে, রক্ত দিতে হবে, এগিয়ে যাও” অস্ত্র নাও “বাংলার বুক থেকে বিদেশী অত্যাচারী জালেমশাহী হটাও বাঙালীরা, কৃষক শ্রমিক ছাত্র যুবক জনগণ মুক্তির আদর্শে উদ্বুদ্ধ সদা জাগ্রত সৈনিক নিষ্ঠুর মৃত্যুর সংগে লড়াই করছে দিনের পর দিন রাতের পর রাত। “দানবের সাথে সংগ্রামের তরে সবাই প্রস্তুত ঘরে ঘরে” তবে নাগ নাগিরা চারিদিকে ফেলছে বিষাক্ত নিঃস্বাস সংগ্রামী গণঐক্যে ফাটল সৃষ্টি যেন না হয়। লক্ষ লক্ষ নরনারী পশুর মত জীবন বিসর্জন দিয়েছে কোটি কোটি লোক গৃহহারা, সম্পদহারা পথের কাঙ্গাল হয়েছে। অসংখ্য নারী তার সতীত্বের মর্যাদা হারিয়েছে, বাংলার কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বিনষ্ট হয়েছে। লক্ষ লক্ষ বাড়ি ঘর ভস্মীভূত হয়েছে সেই মহাশ্মাশানের বুকে দাঁড়িয়ে সংগ্রামী বাংলার নতুন ইতিহাস সৃষ্টির দায়িত্ব আমাদের উপর। পুরাতনের ধ্বংসস্তুপের উপর গড়ে তুলতে হবে আমাদের নতুন স্বাধীন দেশ, স্বাধীন জাতি, সার্বভৌম রাষ্ট্র দানবের নির্মমতা, কুচক্রীর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে স্বাধীনতার অগ্নি পরীক্ষায় আমাদের উত্তীর্ণ হতে হবে। স্বাধীনতা, দুঃখ, কষ্ট, ত্যাগ সাধন, সংগ্রাম, আর রক্ত সব এক মিছিলে একাকার হয়ে এগিয়ে চলেছে ভাবী কালের দিকে । ভাবী বংশধরদের জন্য একটি নতুন ইতিহাস নতুন দেশ উপহার দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে- আর দেরী নয়। সংগ্রামী বাংলার বসন্ত চলে যায়। গণবিপ্লবের সময় বহিয়া যায়।