পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

379 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাদপত্র তারিখ সাক্ষীগোপাল মন্ত্রীদের প্রতি একটি রণাঙ্গন ৩০ অক্টোবর, ১৯৭১ খোলা চিঠি বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকার সাক্ষীগোপাল মন্ত্রীদের প্রতি একটি খোলা চিঠি মহামান্য মন্ত্রী মহোদয়গণ। আপনারা আমাদের রক্তমাখা ছালাম গ্রহণ করবেন। বাংলাদেশের সবুজ শ্যামল প্রান্তরে গ্রাম্য-চাষীদের ঘরে পান্তাভাত খেয়ে আপনারা মানুষ হয়েছেন। জন্মের পর থেকে মাতৃভাষা বাংলার মাধ্যমে লেখাপড়া শিক্ষা করেছেন। আপনাদের মাতা অথবা পিতা কেহই পশ্চিমা বেনীয়ার ঔরষজাত নন। অথচ আপনারা বাংলাদেশের সেজে নিজেদের বিবেককে পশুর বিবেকে পরিণত করেছেন। কিন্তু আপনারা কি কখনো ভেবেছেন আপনাদের দিয়ে শুধু বাঙালী নিধনযজ্ঞেই সহায়তা করে নেওয়া হবে? ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটি থেকে যখন ইয়াহিয়া গোষ্ঠীকে পাততাড়ি গুটে নিয়ে সুদূর ১২শত মাইল দূরে পশ্চিম পাকিস্তানে হিজরত করতে হবে তখন আপনারা বাঙালী গাদ্দার বলে তাদের দয়া থেকে পরিত্যক্ত হবেন। সেই সময় আপনারা কোন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করবেন? পৃথিবীর কোন দেশই বাংলাদেশের গণহত্যার নায়কদের ভবিষ্যতে কোন আশ্রয় দিতে পারে না বলে ভবিষ্যত বাণী দানকারী পণ্ডিত ব্যক্তিরা মতামত ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি অধিবাসীর আন্দোলন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ২৪ বছর পাঞ্জাবী পুঁজিপতি গোষ্ঠীর শাসন-শোষণে অতিষ্ঠ হয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের নাগপাশ থেকে মুক্ত হবার সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন। এ আন্দোলন বাংলাদেশে বসবাসকারী কোন বাঙালী অথবা অবাঙালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়। কিন্তু সে সত্বেও কতিপয় ব্যক্তি ধর্মের দোহাই দিয়ে পাঞ্জাবী গোষ্ঠীর যে দালালী করে আসছেন সে সম্পর্কে আমাদের মতামত হচ্ছে ধর্ম একটি মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইচ্ছা করলে একটি মানুষ তার ধর্ম ত্যাগ করতে পারে কিন্তু ভাষা ত্যাগ করতে পারে না। তাই ধর্মের বড়ি দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। অধিকৃত এলাকার সাক্ষীগোপাল মন্ত্রিসভার শ্রমমন্ত্রী জনাব এ, এস,এম সুলায়মান সাহেব আপনি তো পেশাদার দালাল। আপনার দালালী করার অভ্যাস নতুন নয়, পুরাতন ? আপনি তো ঢাকায় অধুনালুপ্ত পূর্ব পাকিস্তানে একটি দালাল (বীমা) কোম্পানীর প্রধান ছিলেন। সেই সময় থেকেই আপনি দালালী ব্যবসায় পাকা হয়ে উঠেছেন। অপরপক্ষে নিজেকে শ্রমিক দরদী বলে পরিচয় দিযে একজন শ্রমিক নেতা রূপে বড় বড় করতেন। কিসের দুঃখে আপনি ইয়াহিয়া খানের দালালীর খাতায় নতুন করে নাম লিখালেন ? বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত মরহুম নেতা শেরেবাংলা এ, কে, ফজলুল হক সাহেবের নাম ভাঙ্গিয়ে নেতার গড়া কৃষক-শ্রমিক পার্টির সর্বেসর্বাও বনেছিলেন এক সময় এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন পুরোভাগের নেতা বলে জাহির করার জন্য বাংলাদেশের মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সভায় উপস্থিত থেকে সোচ্চার কণ্ঠে নিজেকে স্বাধীনতার অগ্রনায়ক বলে দাবী করেছিলেন। কিন্তু, কোথায় আপনার সেই