পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় জয়বাংলা ৫ম সংখ্যা ৩ এপ্রিল, ১৯৭১ বাংলার বীর সৈনিকেরা-বাংলা রাইফেল বাহিনী, বাংলা রেজিমেন্ট, পুলিশ, আনসার, স্বেচ্ছাসেবকযেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই করিতেছেন, তাহার তুলনা বিশ্বের ইতিহাসে মিলিবে না। সারা বিশ্ব তাহাদিগকে সালাম জানাইতেছে। বাংলার সাড়ে সাত কোটি বীর জনতার পক্ষ হইতে “জয় বাংলা” ও তাহাদিগকে জানাইতেছে হাজারো সালাম। একের পর এক শত্রর ঘাঁটি আমাদের বীর সৈনিকেরা প্রাণপণ লড়াই করিয়া দখল করিয়া লইতেছে। বাংলার মাটি হইতে শত্রদেরকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত আমাদের আরাম হারাম। বাংলার সমগ্র উত্তরাঞ্চল (দুই একটি জায়গা ছাড়া) মুক্তিবাহিনীর দখলে। পূর্বাঞ্চলেরও অধিকাংশ অংশ মুক্তিবাহিনীর করায়ত্ত। স্বাধীন বাংলার সৈন্যবাহিনী অন্যান্য অংশ হইতে ইনশাআল্লাহ অচিরেই শত্রদেরকে উৎখাত করিবে। বাংলার অন্যান্য বীর সন্তানদের প্রতি আহবান-আপনারা বাংলা-সেনাবাহিনীর সহিত কাঁধে কাঁধ মিলাইয়া লড়াই এবং তাহাদের সহিত সর্ব প্রকার সহযোগিতা করুন। জনসাধারণের প্রতি আহবানঃ সৈনিক ভাইদের যখন যা প্রয়োজন আপনাদের সাধ্যমত যোগাইবার চেষ্টা করিবেন। নিজেদের হাজার অসুবিধা হইলেও লক্ষ্য রাখিবেন সৈনিক ভাইদের যেন কোন কষ্ট না হয়, কেননা বাংলাদেশের পতাকাকে সমুন্নত রাখিবার জন্য তাহারা প্রাণপণ লড়াই করিতেছেন। আমরা সকলেই লড়াই করিতেছি সন্দেহ নাই, কিন্তু সৈনিক ভাইরাই সকলের আগে রহিয়াছেন। ঝড়-ঝাপটা তাহদের উপর বেশী যাইতেছে। বাংলাদেশের শুধুমাত্র ঢাকা এবং চট্টগ্রাম হইতেই দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হইত। উক্ত দুইটি শহরে প্রচণ্ড লড়াই চলিতেছে বিধায় কোন দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হইবার কোন সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশের অন্য কোন শহর হইতে কোন দৈনিক পত্রিকা আজ পর্যন্ত প্রকাশিত হয় নাই। মাসিক, পাক্ষিক, সাপ্তাহিক ও সাময়িকী বহু প্রকাশিত হয়, কিন্তু কোন দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় না। দেখা যাইতেছে এই ক্ষুদ্র আকারে “জয় বাংলা”-ই বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র দৈনিক পত্রিকা। কাজেই “জয় বাংলা”-ই স্বাধীন বাংলার সাড়ে সাত কোটি জনগণের একমাত্র মুখপত্র। ইহা অযৌক্তিক দাবী নহে, এই দাবী অখণ্ডনীয় যুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সেহেতু “জয় বাংলা’র মতামতকে সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া সকলের কর্তব্য বলিয়া আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।.