পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

406 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইন জারী করে এই বিপুলসংখ্যক সদস্যে অনুপস্থিতিতেই ইয়াহিয়া তার কাজ হাসিল করে নিতে পারবে। সম্প্রতি করাচীর ডন’ পত্রিকা এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে এ ব্যাপারে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। ডন’ এর মতে এভাবে বাঙালীদের সংখ্যালঘিষ্ঠ করে রেখে পরিষদের অধিবেশন বসানো হলে তা গণতন্ত্র সম্মত হবে না। ডন’ পত্রিকা কি তবে গণতন্ত্রের পক্ষ নিয়ে সংগ্রামে নেমেছে? তাও কি সম্ভব ? আসলে ডন পত্রিকার দৃষ্টি অন্যত্র নিবদ্ধ। ডন এর মুরববী ইউছুফ হারুণের স্বার্থ মার্কিন জোয়ালে বাঁধা। পশ্চিম পাকিস্তানের ডানপন্থী মার্কিন কর্তাভজার দল এইভাবে পরোক্ষ চাপ দিয়ে পাকিস্তানের অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতার আসনগুলিও শূণ্য ঘোষণা করাতে চায়, যাতে করে সেগুলিও আবার নির্বাচন হয় এবং তাঁরা সেগুলি আপোষ ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে বগল বাজাতে পারেন। এতে তাঁতের ডবল লাভ। একদিকে শূন্য খোঁয়াড়ে আরো কিছু মেষ কিংবা মোষের আমদানী, অন্যদিকে ভুট্টোর সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে চাপা দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের মাটিতে নিজেদের হারানো সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ লাভ। ইয়াহিয়া কি সরে দাঁড়াবে ? এ নিয়ে কিছু কিছু জল্পনা-কল্পনা দেখা যাচ্ছে। প্রধানতঃ পশ্চিমা দেশগুলিতেই এ ধরনের খবর রটছে বা রটানো হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ইয়াহিয়ার স্থলে জেনারেল ওমর বা অন্য কেউ ক্ষমতা নিয়ে বাংলাদেশের নেতাদের সাথে আলোচনা শুরু করবে। স্পষ্টতঃ এটি একটি রাজনৈতিক ফিলার’। ইয়াহিয়াকে সরিয়ে দিলে বাঙালীদের মনোভাব কি দাঁড়ায় পশ্চিমা শক্তিবর্গ তা বুঝে দেখতে চায়। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষের মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। পাক-সামরিক বাহিনীকে বাঙালীরা এখন আর বিচ্ছিন্নভাবে দেখচে না, এ সত্য পশ্চিমারা বুঝে থাকবে। ফলে এ ব্যাপারে খুব বেশীদূর অগ্রসর হওয়ার সুযোগ তারা পাচ্ছে না।