পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

435 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ মুক্তাঞ্চলের জনগণের প্রতি আমার দেশ ২৫ নভেম্বর, ১৯৭১ পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসনের বক্তব্য বাংলাদেশঃ ১৩শ সংখ্যা মুক্তাঞ্চলের জনগণের প্রতি পূর্বাঞ্চলীয় घस्थानानत वकदा বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা বর্তমানে বীর বাংলার মুক্তিপাগল সেনারা দখল করে নিয়েছে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন ব্যবস্থাও চালু হয়েছে। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ও গেরিলাদের হাতে মার খেতে খেতে পাক বর্বর সেনারা দিন দিন মনোবল হারিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। সেদিনও হয়তো বেশী দূরে নয় যেদিন সমস্ত বাংলাদেশ শত্রমুক্ত হবে এবং স্বাধীন সার্বভৌম ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রুপে বিশ্বের মানচিত্রে সোনালী অক্ষরে “সোনার বাংলা” স্থান পাবে। বাংলাদেশের যে সকল এলাকা পূর্বে মুক্ত হয়েছে, সদ্যমুক্ত এলাকার সম্মুখে শত্রুসেনাদের বিবর ঘাঁটি অবস্থিত, সে সকল এলাকার জনসাধারণ নানা অসুবিধার মধ্যে দিনযাপন করছেন। তাদের সুষ্ঠু জীবনধারণ, স্বাধীনতা যুদ্ধে লিপ্ত বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ও গেরিলা বাহিনীর যুদ্ধ কার্যে অগ্রগতির জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুক্ত এলাকায় অসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসন ব্যবস্থার সহিত মুক্তাঞ্চলের জনগনের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনীয়। প্রশাসন ব্যবস্থার যে অস্থায়ী কাঠামো এবং কার্য বিবরণ কার্যকরী হতে যাচ্ছে তার বিস্তারিত বিবরণ নিম্নরুপ। বিচার বিভাগঃ- জনগণ নানাবিধ সমস্যার মধ্যে জীবন যাপন করছেন। নিজেদের মধ্যে কোন বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করবেন না। আপনাদের নানাবিধ সমস্যা সম্পর্কে সরকার সম্পূর্ণরুপে সচেতন, আপনার নিকটস্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধির নিকট আপনার সমস্যাবলী পেশ করুন। মনে রাখবেন, এ সরকার আপনার দ্বারা গঠিত, আপনার জন্য। পুলিশ বাহিনীঃ- যুদ্ধকালীন অবস্থায় নিরীহ গ্রামবাসীদের দুস্কৃতিকারী ও অশান্তি সৃষ্টিকারীদের সম্মুখীন হতে হয়। মুক্তিবাহিনী নামধারী কতিপয় দুস্কৃতিকারী জনগণের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারে। আপনার নিকটেই পুলিশ বাহিনী রয়েছে- আপনারই শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য। সুতরাং যখনই কোন দুস্কৃতিকারী ও অশান্তি সৃষ্টিকারী টাউটের সম্মুখীন হবেন তখনই পুলিশ বাহিনীর হাতে তাদেরকে সমর্পন করুন। স্বাস্থ্য বিভাগঃ- যুদ্ধকালীন অবস্থায় বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর নিয়মিত সেনা ও গেরিলা বাহিনী ছাড়াও মুক্তাঞ্চলের জনগণ অসাবধানতা বশতঃ যে কোন মুহুর্তে শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে আহত হতে পারে। যে যেখানেই যখনই কোনরুপ শুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় তখনই তাকে নিকটস্থ বাংলাদেশ সরকারের হাসপাতালে প্রেরণ অথবা নিকটবর্তী ডাক্তারকে সংবাদ দিতে সচেষ্ট থাকবেন। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর নিয়মিত সেনা যেমনি একজন মুক্তিযোদ্ধা তেমনি আপনিও একজন মুক্তি সংগ্রামী। সুতরাং আপনার ক্ষতি দেশের ক্ষতি। উন্নয়ন, পুনর্গঠন, পুনর্বাসন ও সাহায্যঃ- দীর্ঘ আট মাস যাবৎ শক্রসেনারা সোনার বাংলাকে মরণ কামড় দিয়ে শাশানে পরিণত করে চলেছে। তদুপরি বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর যান-বাহন চলাচল এবং জনসাধারণের স্বল্প সময়ে সহজতর উপায়ে সরকার ও মুক্তিবাহিনীর সহিত যোগাযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণের পুনর্বাসন ও সাহায্য করার জন্য উক্ত উন্নয়ন বিভাগের সহিত সহযোগিতা রক্ষা করে চলুন।