পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

469 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সাড়ে সাত কোটি অভিযান ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৭১ বাঙালীর ঐতিহাসিক পুরস্কার ১ম বর্ষঃ ৪র্থ সংখ্যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর দেশপ্রেমে উদ্দীপ্ত দুর্জয় পৌরুষের ঐতিহাসিক পুরস্কার এক নদী রক্ত, অশ্রু এবং হাহাকারের অতলান্তে কবরে পাকিস্তানী হানাদার জঙ্গী দস্যদের সর্বশক্তি চিরকালের মত সমাধিস্থ হয়েছে। গতকাল বিকাল পাঁচটা এক মিনিটে শত্রকবল মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের সমস্ত অঞ্চল। ঢাকা শহরের আনন্দবিহবল হাজার হাজার নাগরিকের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে “জয় বাংলা” “বঙ্গবন্ধু জিন্দবাদ” “ইন্দিরা গান্ধী জিন্দাবাদ” “বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী জিন্দাবাদ”। এই বিশাল জনতার সামনে রেসকোর্স ময়দানে মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কাছে নতশীরে সসৈন্যে আত্মসমর্পণ করেছে দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর অধিনায়ক বর্তমান লেঃ জেনারেল নিয়াজী। সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকা শহরে চালু হয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রশাসন। তোমার আসন শূন্য আজি হে বীর পূর্ণ করো রাজধানী ঢাকা শহরে আজ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা যখন আপন গৌরবে উড্ডীন, তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতি সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর হৃদয়কে বিষাদে ভারাক্রান্ত করে তুলেছে। যে মানুষটি মুখের একটি কথায় তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত পদার উচ্ছাসের মত কেপে কেপে উঠতো, তিনি আজ বাংলার সবুজ, নরম, মায়ের মতো স্নিগ্ধ মাটি থেকে হাজার মাইল দূরে, রুক্ষ, উষর বান্ধবহীন নির্জন নিঃসঙ্গ পরিবেশে বর্বর পাকিস্তানী ফ্যাসিষ্ট চক্রের কারাগারে বন্দী। তাই স্বাধীনতার কোন উৎসবই আজ আনন্দমুখর হয়ে উঠবে না যতক্ষণ বঙ্গবন্ধুকে আমাদের ভেতর ফিরে না পাবো। 米 “বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনে এটাই প্রমাণ হ’ল বেয়নেট দিয়ে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাকে দাবিয়ে রাখা যায় না। আজকের দিনে আমাদের মন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্যে উদগ্রীব। আমি আশা করব “ভারত আমাদের মিত্র হিসাবে আমাদের অনুরোধে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ মুক্ত করার জন্যে-দখল করবার জন্যে নয়।” -তাজউদ্দীন আহমেদ