পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৬৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

612 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ বাংলাদেশের সরকার তৈরীঃ স্বীকৃতির | বাংলাদেশ সংবাদ পরিক্রমা ৩৯তম । ৫ নভেম্বর ও ১৪ ডিসেম্বর, দাবীতে জনসভা ও ৫০তম সংখ্যা Տի, Գ Տ বাংলাদেশ সরকার পুরো প্রশাসনভার নেবার জন্য তৈরী মুক্ত বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থার বিস্তারিত কাঠামো বাংলাদেশ সরকার এখন দ্রুত চূড়ান্ত করে ফেলছেন। প্রকাশ শিঘ্রই পাকিস্তানী শত্রসেনাবাহিনীকে বিতাড়িত করে গোটা বাংলাদেশকে স্বাধীন করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ সরকার আগে থেকেই পূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরী হয়ে থাকছেন। শত্রসৈন্য সম্পূর্ণ বিতাড়িত হওয়ার পর যাতে বাংলাদেশের ভেতরে কোন অরাজক অবস্থা সৃষ্টি না হয় সেইজন্যই গোটা ছকটা তৈরী করে রাখা হচ্ছে এবং আগাম কতকগুলি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানী শত্রসৈন্যদের সাহায্যকারী লোকদের শাস্তিদানের ব্যাপারেও ইতিমধ্যে কয়েকটা নিয়ম-কানুন করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শত্রসৈন্যদের সংগে বা পাকিস্তান সরকারের সংগে সহযোগিতা করার অভিযোগে কাউকে মুক্তিফৌজ বা কেউ কোন শাস্তি না দিয়ে তাদের ধরে আঞ্চলিক কমিটির কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রত্যেক এলাকায় এদের শাস্তি দেয়ার জন্য বা অনুরুপ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাংলাদেশ সরকারের একটি বিশেষ কমিটি থাকবে। বাংলাদেশের জন্য একটি পূর্ণাংগ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরী করার জন্যও ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিকল্পনা বিশারদের সংগে কথা বলেছেন। উক্ত বিশারদ বাংলাদেশের কয়েকজন অভিজ্ঞ প্রতিনিধির সংগে আলোচনা করে একটি পূর্ণাংগ পরিকল্পনা তৈরী করেছেন। স্বীকৃতির দাবীতে হাইডপার্কে বিরাট জনসভা গত রবিবার হাইডপার্ক স্পীকার্স কর্নারে বাংলাদেশের স্বীকৃতির দাবীতে এক বিরাট জনসভা হয়। গ্রেট বৃটেনের বিভিন্ন অঞ্চল হতে বহু কষ্ট স্বীকার করে পনের সহস্রাধিক বাঙালী হাইডপার্কে সমবেত হয়ে বজ্ৰকণ্ঠে দাবী জানান, বাংলাদেশকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দাও ও শেখ মুজিবুরের মুক্তি চাই। ষ্টিয়ারিং কমিটির জনসভায় বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল কিন্তু তিনি জাতিসংঘের বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশের স্বপক্ষে ও বিভিন্ন দেশের নিকট স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টার জন্য উপস্থিত হতে পারেননি। কেন্দ্রীয় ষ্ট্ৰীয়ারিং কমিটি তাই দেশের বৃহত্তম স্বার্থে একই স্থানে অনুষ্ঠিত একই উদ্দেশ্যে আহুত আওয়ামললীগের জনসভাকে সমর্থন জানিয়ে উক্ত জনসভায় সকলকে শান্তিপূর্ণভাবে যোগ দিতে অনুরোধ করেন। একই স্থানে দুইটি জনসভা বিদেশীদের নিকট ভ্রান্ত ধারণার সৃষ্টি হতে পারে বা বাংলাদেশের এই দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের শেষ পর্যায়ে কোনরূপ বিভেদ সৃষ্টি না করে ষ্টিয়ারিং কমিটির আহুত জনসভা বাতিল করে সকলে এক বাক্যে বাংলাদেশের স্বীকৃতি দাবী জানান। সভাশেষে পনের সহস্রাধিক জনতার মিছিল বিভিন্ন রাস্তা প্রদিক্ষণ করে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর নিকট ১০নং ডাউনিং ষ্ট্রিটে যেয়ে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের স্বীকৃতির আবেদন জানান।