পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

57 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড বিশ্বের বৃহৎ শক্তিপুঞ্জে তাদের প্রভাব বলয়ের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে এই সত্যটির প্রতি যদি উদাসীন থাকেন তা হলে বিশ্বের একটা মৌলিক ও শাশ্বত সত্যের প্রতিই মুখ ফিরিয়ে থাকা হবে। সেই সত্যটি হচ্ছেঃ পৃথিবী কোথাও কখনও জাতীয় মুক্তি সংগ্রামকে শেষ পর্যন্ত কেউই ব্যর্থ করতে পারেনি। জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম চিরকাল জয়লাভ করেছে। যারা আজ বাংলাদেশ সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলছেন তাদের এই সত্যটি সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত থাকতে হবে। হানাদার বাহিনীকে অস্ত্র, রসদ ও অর্থনৈতিক সাহায্যদান অব্যাহত রেখে রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব নয়। সিনেটর কেনেডির এ ব্যাপারে বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। মার্কিন জনগণের মধ্যে তাঁর প্রভাব অনস্বীকার্য। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্যদান যে বাংলাদেশের সংকটকে দীর্ঘস্থায়ী করা এবং রাজনৈতিক সমাধানের পথে পর্বত প্রমাণ অন্তরায় সৃষ্টি করা, মার্কিন জনগণের কাছে এই সত্যটাকেই তুলে ধরতে হবে। “আমরাও একা নই বলে ইয়াহিয়া খান যে সামরিক দম্ভোক্তি করেছে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের প্রেক্ষিতে এই দম্ভোক্তি যাদের সমর্থনের কথা ভেবে করা হয়েছে, তাদের জন্যে মোটাও শ্লাঘার বিষয় নয়, মার্কিন জনগণ ও মার্কিন সরকারের কাছে এ কথাও সিনেটর কেনেডিকেই পৌঁছে দিতে হবে। শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শনের এং পাকিস্তানী সামকির জান্তা কর্তৃক দখলীকৃত বাংলাদেশে তার সফরের অনুমতি বাতিলের পর, এই দায়িত্ব তাঁর ওপর বিশেষভাবে বর্তেছে। চারটি প্রশ্ন বাংলাদেশ সমস্যা সম্পর্কে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী চারটি মৌলিক প্রশ্নের প্রতি না? সংখ্যাগরিষ্ঠরা কি সংখ্যালঘুদের দ্বারা নিপীড়িত হতে থাকবেন? এই সংখ্যালঘুরাই কি সংখ্যাগরিষ্ঠদের দাবিয়ে রাখার জন্যে অন্যান্য দেশ থেকে অস্ত্র আমদানী করে চলবেন? তিনি চান যে, প্রতিটি রাষ্ট্র উপরোক্ত প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করুণ এবং উত্তর দিন। যারা আজ রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলছেন, তাদের আন্তরিকতা কতটুকু তার বিচার হবে ভারতীয় প্রধানত্রীর উপরোক্ত প্রশ্নের কার্যকরী উত্তরের ওপর।