পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ডশরোনাম সূত্র তারিখ ৬১। নয়াদিল্লীতে “বাংলাদেশ’ মিশনঃ ভারত দৈনিক পাকিস্তান ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ নয়াদিল্লীতে ”বাংলাদেশ’ মিশনঃ ইসলামাবাদ, ৫ই সেপ্টেম্বর (এ পি পি)। -পাকিস্তান আজ ভারত সরকারের কাছে, নয়াদিল্লীতে তথাকথিত বাংলাদেশ মিশন স্থাপনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। আজ সকালে পাকিস্তানস্থ অস্থায়ী ভারতীয় হাই কমিশনারকে পররাষ্ট্র দফতরে ডেকে এনে একটি প্রতিবাদ লিপি প্রদান করা হয়। এতে বলা হয় যে, এই কাজের মাধ্যমে ভারত সরকার পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা নাশের ব্যাপারে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে তার প্রকাশ্য যোগসাজশের কথা আর একবার প্রমাণ করেছে। ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ভারত সরকার কর্তৃক বিদ্রোহী ও দল ত্যাগীদের ভারতীয় এলাকা থেকে পাকিস্তান বিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনার সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ব্যাপারে পাকিস্তানের গভীর উদ্বেগের কথা জানানো হয়। তাকে একথাও বলা হয় যে, ভারত সরকারের বিভিন্ন উস্কানীমূলক কাজ এবং ভারতীয় নেতৃবৃন্দের পাকিস্তানের সংহতি বিরোধী বিবৃতিসমূহ উপমহাদেশের শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয় যে, উপমহাদেশের এই বৈরী নীতি অব্যাহত থাকলে যে পরিণতি হবে ভারত সরকার তা অনুধাবন করবেন বলে পাকিস্তান সরকার তা আশা করেন। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয় ভারতীয় সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে যে, গত ৩০শে আগষ্ট নয়াদিল্লীতে আনুষ্ঠানিকভাবে তথাকথিত বাংলাদেশ মিশন খোলা হয়েছে এবং এতে এর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। খবরে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তানের হাই কমিশনের বরখাস্ত কর্মচারীদের এই মিশন পরিচালনার কাজে নিয়োগ করা হবে এবং মিঃ বাবুল কান্তি দাস নামে এক ব্যক্তিকে এই মিশন দেখা-শোনার দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে। পাকিস্তান সরকার বিদ্রোহী ও দলত্যাগীদের ভারতের মাটি থেকে পাকিস্তার বিরোধী কার্যকলাপ চালানোর জন্য সুযোগ-সুবিধা ও অনুমতিদানকে গুরুতর বিষয় বলে মনে করেন। পাকিস্তান সরকার এ খবরেও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণী বিভাগের চেয়ারম্যান মিঃ ডি, পি ধর, কলকাতার তথাকথিত বাংলাদেশ নেতৃবৃন্দের সাথে কয়েক দফা বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী গত ১লা সেপ্টেম্বর কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন যে, স্বাধীন বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম লক্ষ্য। পাকিস্তান সরকার এই বিবৃতির ব্যাখ্যা চাচ্ছেন এবং একে পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর হামলার শামিল বলে মনে করবেন। এ প্রসঙ্গে প্রতিবাদলিপিতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সীমান্ত লঙ্ঘন এবং বিনা উস্কানীতে পাকিস্তানী এলাকায় গোলাগুলি বর্ষণের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রতিবাদের ব্যাপারেও ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।