পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

185 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৮৪। ইয়াহিয়া-পদগনি আলোচনা দৈনিক পাকিস্তান ১৭ অক্টোবর, ১৯৭১ ইয়াহিয়া-পদগনি আলোচনা পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সংহতি অক্ষুন্ন রাখার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ ১৬ই অক্টোবর, (এ পি পি, তাস) - পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান গতরাত্রে সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগনির সাথে এক সাক্ষাৎকারে মিলিতহন। তাঁরা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্যাবলী সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। অপরপক্ষে ভারতের প্রেসিডেন্ট ভি, ভি গিরীও গতকাল সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নিকোলাই পদগনির সাথে সাক্ষাৎ করেন। হৃদ্যতা ও আন্তরিকতাপূর্ণ এ আলোচনায় সোভিয়েট সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিকোলাই বিরুবীন এবং ভারতের প্রেসিডেন্টের সেক্রেটারীও অংশগ্রহণ করেন। প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের সাথে আলোচনা কালে প্রেসিডেন্ট পদগনি পাকিস্তানের ঐক্য সংহতি তথা পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শান্তি রক্ষায় তার দেশের গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন বলে মনে হয়। তিনি পাকিস্তানের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক উন্নয়নে সোভিয়েট ইউনিয়নের কথা উল্লেখ করেন। প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মাদ জেনারেল ইয়াহিয়া খান পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইরানের শাহানশাহ ও তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা করেন। রুমানিয়া, যুগোশ্লাভিয়া ও সোভিয়েট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টসহ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অন্যান্য দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সাথেও সাক্ষাৎকারে মিলিত হন। প্রেসিডেন্ট ইউনিয়ন, যুগোশ্লাভিয়া ও রুমানিয়ার রাষ্ট্র প্রধানগণ পাক-ভারত উপমহাদেশের পরিস্থিতি তথা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘর্ষের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বলে মনে হয়। পাকিস্তান তার একক উদ্যোগে উপমহাদেশের শান্তি অক্ষুণ্ণ রাখার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন রুমানিয়া ও যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট গভীরভাবে তা অনুধাবন করেন। প্রেসিডেন্ট পদগনির মনোভাবের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে, উপমহাদেশের শান্তি অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারটা ভারতের পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার একান্তভাবেই তার নিজস্ব ব্যাপার, আন্তর্জাতিক আইন ও নৈতিকতার দিক থেকে সীমান্তের অপর পার হতে সে ব্যাপারে হস্তক্ষেপের কোন যৌক্তিকতা নেই। প্রেসিডেন্ট এই মর্মেও অভিমত প্রকাশ করেন যে, ভারত যে শান্তির কথা বলে তার যথার্থতা প্রমাণ করতে হলে, তাকে পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে তার সেনাবাহিনী প্রত্যাহার, অনুপ্রবেশ তথা অন্যান্য আক্রমণাত্মক তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। তা হলে পাকিস্তানের সীমান্ত বরাবর বর্তমানের আত্মরক্ষামূলক অবস্থানগুলো থেকে তার সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহার করবে।