পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

208 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড নিরসনের উদ্দেশ্যে জেলাওয়ারীভাবে বাস্তত্যাগীদের সংখ্যা পূর্বেই প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদ্যোগে একটি নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে ভারতীয় উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে একটি জরিপ কার্য চালিয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে চলে যাওয়া প্রকৃত উদ্বাস্তুদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণের জন্যও আমরা প্রস্তাব করেছিলাম। ভারত যদি তার প্রদত্ত হিসাব সম্পর্কে নিশ্চিতই হয়ে থাকে, তবে এই প্রস্তাব গ্রহণে ভারতের পক্ষে কুষ্ঠাবোধ করার কোন কারণ নেই। ভারত বিশ্বকে আরও বলেছে যে, পাকিস্তান বাস্তুত্যাগী ব্যক্তিদের সংখ্যা যে ২০ লাখ বলে বর্ণনা করেছে, ভারতের মতে তার মধ্যে শুধু মুসলমানের সংখ্যাই ধরা হয়েছে এবং ভারতের বক্তব্য অনুসারেই বলা যায় বাদবাকী যারা ভারতে রয়েছে, তারা অমুসলমান। এটা ভারতের দুরভিসন্ধিমূলক বিকৃত তথ্য এবং তাতে বাস্তুত্যাগীদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পাকিস্তানের নীতি প্রতিফলিত হয় না। আমি এটা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে, গত গোলযোগের সময় যারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে চলে গেছে তাদের মধ্যে প্রত্যেকটি পাকিস্তানীকে সে মুসলমান, হিন্দু অথবা অন্য কোন সম্প্রদায়েরই হোক না কেন নিজের বাড়ীঘরে ফিরে আসার পর স্বাভাবিক কাজকর্মে আত্মনিয়োগে স্বাগত জানানো হবে। এই ধরণের লোকের সংখ্যা যাই হোক না কেন এবং তারা যে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রেরই হোন না কেন সরকার জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে তাদের পুনর্বাসন ও স্বাভাবিক জীবন-যাপন পুনর্বাসিত হওয়ার জন্য অর্থ সাহায্যসহ সম্ভাব্য সবরকমের সাহায্য প্রদান করবেন। প্রত্যাবর্তনকারী প্রকৃত নাগরিকদের যাচাই করার ব্যাপারে যে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে এবং এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে অবশ্যই স্বাগত জানানো হবে। সেইসব হতভাগা লোকদের এবং তাদের নিজ নিজ বাড়ীঘরে ফিরে আসতে দেয়া হবে।