পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

384 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড (৩) “মামলা-মকদ্দমার বিচার এবং মৌলিক অধিকার রক্ষার ব্যাপারে বিচার-বিভাগকে স্বাধীনতা দেয়া হবে।” (৪) “আইন-তৈরী সংক্রান্ত, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতাসহ সব রকম ক্ষমতাই ফেডারেল সরকার এবং প্রদেশগুলোর মধ্যে এমনভাবে ভাগ করা হবে যে, প্রদেশগুলো সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসন অর্থাৎ সর্বাধিক পরিমাণ আইন-প্রণয়ন সংক্রান্ত, প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা ভোগ করবেন কিন্তু একইসঙ্গে ফেডারেল সরকারও বাইরের ও অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে তার দায়িত্ব পালন এবং দেশের স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য পর্যাপ্ত আইন-প্রণয়ন-ক্ষমতা, প্রশাসনিক ক্ষমতা ও আর্থিক ক্ষমতা পাবেন।” (৫) “নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে যেনোঃ (ক) পাকিস্তানের সব এলাকার জনগণ সব রকম জাতীয় প্রচেষ্টায় পুরোপুরি অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হয়। এবং (খ) একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইন করে এবং অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রদেশের মধ্যে এবং প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন এলাকার মধ্যে অর্থনৈতিক এবং অন্য সব রকম বৈষম্য দূর করা হয়। (৬) “শাসনতন্ত্রের উপক্রমণিকায় এইমৰ্মে ঘোষণা থাকতে হবে যে (ক) পাকিস্তানের মুসলমানরা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত পর্যায়ে, পবিত্র কোরান ও সুন্না মোতাবেক ইসলামের শিক্ষা অনুসারে তাদের জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। এবং (খ) সংখ্যালঘুরা অবাধে তাদের ধর্ম-পালন এবং পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে সব রকম অধিকার, সুযোগ-সুবিধা এবং নিরাপত্তা ভোগ করতে পারবেন।” সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই যে, এই আদেশে বলে দেয়া হয়, “পাকিস্তানে বর্তমানে যে সব প্রদেশ ও এলাকা রয়েছে কিংবা পরে যে সব প্রদেশ ও এলাকা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তারা সবাই একটি ফেডারেশনের অধীনে এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ হবে যেনো পাকিস্তানের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জাতীয় সংহতি নিশ্চিত হয় এবং ফেডারেশনের সংহতি কোন রকমেই ব্যাহত না হয়।” প্রেসিডেন্ট তাঁর ২৮শে মার্চের ভাষণে বলেন, আমাদের জনগণ গভীর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। সুতরাং তারা পাকিস্তানের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে কোন কাজ ছাড়া প্রায় সব জিনিসই বরদাশত করবে। যদি কেউ মনে করে যে, সে দেশ কিংবা জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করতে পারবে কিংবা কেউ যদি আমাদের জনগণের মৌলিক ঐক্য নষ্ট করতে পারবে মনে করে, তবে সে বড় ভুল করবে। জনগণ এটা কোন প্রকারেই বরদাশত করবে না। রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের জনগণের সংহতির উপর বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এমন কোন সমাধান দেয়ার অধিকার কারুরই নেই। কেউই তা বরদাশত করবে না।” আওয়ামী লীগ তাদের ৬-দফা যেভাবে জনগণের কাছে পেশ করেন তাতে পাকিস্তানের সার্বভৌম মর্যাদায় কোন রকম পরিবর্তন সাধনের দাবী ছিল না। প্রথম দফায় বলা হয়, “সরকারের ধরণ হবে ফেডারেল ও পার্লামেন্টারী পদ্ধতির।” শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর নির্বাচনী বক্তৃতাসমূহে বার বার জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি কেবল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন চাচ্ছেন, দেশকে ভাগ করা কিংবা তার ইসলামী আদর্শকে দুর্বল করা তাঁর লক্ষ্য নয়। ১৯৭০ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “৬-দফা কার্যক্রম