পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

398 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড এদিকে সংশোধিত খসড়া ঘোষণাটির বিভিন্ন বিষয় বিবেচনার কাজকে সহজতর করার উদ্দেশ্য ঘোষণাটি পূর্বাহ্নেই জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো এবং জনাব তাজুদ্দীনের হাতে দেয়া হয়। বিকেল ৬টায় জনাব জনাব হাফিজ পীরজাদা এবং জনাব রফি রাজাকে নিয়ে প্রেসিডেন্টের সাহায্যকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পিপিপি প্রতিনিধিরা নিম্নোক্ত যুক্তিসমূহ পেশ করেনঃ (১) সামরিক আইন প্রত্যাহারের পর জাতীয় পরিষদের অনুমোদন না থাকলে প্রস্তাবিত ঘোষণার পেছনে কোন আইনগত সমর্থন থাকবে না। সুতরাং তাঁরা প্রস্তাব করেন যে, হয় ঘোষণাটিকে জাতীয় পরিষদকে দিয়ে অনুমোদন করিয়ে নেয়া হোক কিংবা ঘোষণাটি প্রকাশ করা হোক কিন্তু জাতীয় পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর তা কার্যকরী করা হবে। অথবা বিকল্প-মূলক ব্যবস্থা হিসেবে, জাতীয় পরিষদ কর্তৃক অনুমোদনের আগ পর্যন্ত ঘোষণাটিকে প্রয়োজনীয় আইনগত বৈধতা দেয়ার জন্য প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখা হোক। (২) পিপিপি মত প্রকাশ করেন যে, প্রয়োজনীয় আইনগত বৈধতা ছাড়া এই ঘোষণার কোন মূল্যই থাকবে না। এবং আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে চাইলে এই ঘোষণা তার পরে একটি আইনগত বাধাও হবে না। (৩) অবশেষে যখন জাতীয় পরিষদের যুক্ত অধিবেশন হবে তখন আওয়ামী লীগ কর্তৃক বেপরোয়াভাবে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োগের সম্ভাবনা এড়ানোর উদ্দেশ্য পিপিপি প্রতিনিধিরা প্রস্তাব করেন যে, ঘোষণার এই ব্যবস্থা থাকতে হবে যে, আলাদা আলাদাভাবে দেশের দুই অংশের জাতীয় পরিষদ সদস্যদের বেশির ভাগ সদস্যের অনুমোদন ছাড়া কোন আইন কিংবা শাসনতন্ত্র জাতীয় পরিষদে পেশ করা যাবে না। (৪) তাঁরা মনে করেন যে, ১৯৬২ সালের শাসনতন্ত্রের তৃতীয় তালিকা পরিবর্তনের ক্ষমতা কেবল তালিকাটি সংশোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত এবং তালিকার প্রতিটি বিষয়ই পরিবর্তনের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। দেশ রক্ষার মতো যে সব বিষয় কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে মতৈক্য হয়েছে সে সব বিষয়ে রদবদল করার ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। (৫) প্রাদেশিক গভর্নরদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের “সঙ্গে পরামর্শ করে নয়” বরং কেবল তাদের “সুপারিশ করতে পারবেন এই মর্মে যে ধারাটি রয়েছে তা সংশোধন করতে হবে কেননা তা প্রতিনিধিত্বমূলক (৬) পিপিপি জানতে চান ঘোষণা জারী করার পর LFO-র মর্যাদা কী হবে? এই জিজ্ঞাসার উদ্দেশ্য ছিল LFO-কে টিকিয়ে রাখা হবে কিনা তা জানা। (৭) পরিশেষে, পিপিপি মনে করেন যে, প্রথমে একক পরিষদ হিসেবে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত এবং পরে দুটি কমিটি গঠিত হওয়া উচিত। ২৩শে মার্চ, ১৯৭১ ২৩শে মার্চ তারিখে বিভিন্ন সশস্ত্র সমাবেশ এবং শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে বাংলাদেশ পতাকা উড়ানোসহ এই দিনের ঘটনাবলী অন্যত্র বর্ণনা করা হয়েছে।