পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

418 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, হিন্দুস্তানের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর ৭৬, ৮১, ৮৩, ১০১, ১০৩ ও ১০৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানকে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে পূর্ব পাকিস্তানে কাজে লাগানো হয়েছিলো। পরবর্তী তথ্য থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, এছাড়া আরও দুটি ব্যাটেলিয়নকে কাজে লাগানো হয়েছিলো। ৭৩ নম্বর B.S.F ব্যাটেলিয়ানকে কুচবিহারের মোখিলগঞ্জ এলাকায়, ৭৭ নম্বর B.S.F ব্যাটেলিয়ানকে দিনাজপুরের পশ্চিমাঞ্চলে এবং ১৮ নম্বর B.S.F ব্যাটেলিয়ানকে যশোরের পশ্চিম বনগাঁও নিযুক্ত করা হয়েছিল। হিন্দুস্তান সেনাবাহিনীর সিনিয়র কমান্ডাররা যুদ্ধকার্য পরিচালনা করতো। এদের মধ্যে একজন ছিল ৬১ নম্বর মাউন্টেন ব্রিগেডের কমান্ডার। সম্প্রতি এই ব্রিগেডটিকে পূর্ব পাকিস্তানের রাঙামাটির ২৫ মাইল হিন্দুস্তানী অনুপ্রবেশ শুরু হওয়ার পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বহু পরিমাণ হিন্দুস্তানী অস্ত্রশস্ত্র হস্তগত করেছে। নওয়াবগঞ্জ এলাকায় সেনাবাহিনী একটি গোপন পত্র পেয়েছে। পত্রটি ‘ভারী অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ সম্পর্কে সীমান্তের ওপারে হিন্দুস্তানী এজেন্টের সঙ্গে আলোচনা বৈঠকের বিষয়ে লিখিত। লেখক আওয়ামী লীগের একজন নেতা। পূর্ব পাকিস্তান সংকটের একেবারে গোড়া থেকেই যে হিন্দুস্তান এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তার প্রমাণ এখন হিন্দুস্তান ও অন্যান্য বিদেশী তথ্য মাধ্যমের পরিবেশিত সংবাদ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। একজন হিন্দুস্তানী সাংবাদিক ১১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ২৯ তারিখে কোলকাতা থেকে প্রেরিত এক রিপোটে বলেন যে, বিদ্রোহীরা (তথাকথিত মুক্তিবাহিনী) হিন্দুস্তানের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করেছিলো। বোম্বইর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস প্রকাশিত খবরে সাংবাদিক কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তিবাহিনীর কমান্ডারের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। কমান্ডার তার নাম প্রকাশ করতে চায়নি। কমান্ডার বলেছে, নদীয়ার সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়ায় বিদেশী সৈন্যদের দুটি ইউনিট নিহত হওয়ার পর অথবা কুষ্টিয়া থেকে তাদের অপসারণের পর কমান্ডার সঙ্গে সঙ্গে কোলকাতায় টেলিফোন করে। সে প্রথমে কথা বলে মিঃ অজয় মুখাজীর সঙ্গে সেই সপ্তাহেরই শেষের দিকে যার পশ্চিম ংলার নতুন মুখ্য উজীর হওয়ার কথা। এরপর কমান্ডার কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলে। বাংলাদেশ’-এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে হিন্দুস্তানের কয়েকটি প্রাদেশিক পরিষদে সরকারীভাবে প্রস্তাব গ্রহণ করা হলো। এই প্রদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে তামিলনাড়ু, পশ্চিবঙ্গ, আসাম, কেরালা, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট ও ত্রিপুরা। পশ্চিম বাংলার ডেপুটি মুখ্য উজীর বললেন, যদিও কেন্দ্রীয় সরকার এখনো বাংলাদেশের প্রতি স্বীকৃতি জানায়নি কিন্তু পশ্চিম বাংলায় আমরা বাংলাদেশের প্রতি এখন থেকেই স্বীকৃতি জানাচ্ছি। এদিকে পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থিতি সম্পর্কে হিন্দুস্তানী প্রধান উজীর নিজেই একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ শে মার্চ তারিখে হিন্দুস্তানী পার্লামেন্টের উভয় পরিষদেই প্রস্তাবটি গৃহীত হলো। এই প্রস্তাবে ‘পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও সংহতি প্রকাশ করা হয় এবং তাদের (বিচ্ছিন্নতাবাদীদের) আশ্বাস দেওয়া হয় যে, হিন্দুস্তানের জনগণ তাদের সংগ্রাম সর্বান্তঃকরণে সহানুভূতি জানাবে ও সমর্থন যোগাবে’। হিন্দুস্তানের পার্লামেন্টে গৃহীত বাংলাদেশ সম্পর্কিত প্রস্তাবটি বক্তৃতা প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। এই প্রস্তাব সম্পর্কে বক্তৃতা প্রসঙ্গে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির