পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

478 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড গভর্নর প্রত্যাবর্তনকারীদের মধ্যে লুঙ্গী ও শাড়ী বিতরণ করেন। গভর্নরের প্রশ্নের জবাবে অভ্যর্থনা শিবিরে মেডিকেল অফিসার জানান যে সকল প্রত্যাবর্তনকারীকে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়েছে এবং কোন গুরুতর অসুস্থতা বা মহামারী ঘটেনি। তিনি আরো জানান কয়েক তাদের অবিলম্বে রক্ষা করা হয় । নাটোর নাটোরে জেঃ টিক্কা খান জিন্নাহ সরকারী হাইস্কুল ও সরকারী গার্লস স্কুল পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে জানানো হয় যে, উপস্থিতি সন্তোষজনক এবং ক্লাশ রীতিমতো চলছে। গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা স্কুল প্রাঙ্গণে লাইন দিয়ে দাঁড়ায় এবং জাতীয় সংগীত শোনায় । তিনি পরে গাড়ীযোগে বাজারের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেন এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রত্যক্ষ করেন। রাজশাহী ব্যাপারে এই জনগণের মূল্যবান অবদান রয়েছে এবং পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেয়ার জন্য কোন ব্যক্তিবিশেষ বা রাজনৈতিক দলকে তারা ম্যাণ্ডেট দেয়নি। তারা প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন কিন্তু বিলুপ্ত আওয়ামী লীগ পাকিস্তানকে ভেঙ্গে দেয়ার ম্যাণ্ডেট হিসাবে তাদের সমর্থনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন। জনসাধারনের সক্রিয় সহযোগিতায় সশস্ত্র বাহিনীর সময়োচিত হস্তক্ষেপের ফলে ভাঙ্গনের হাত থেকে পকিস্তান রক্ষা পেয়েছে এবং বর্তমানে পাকিস্তানকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করার জন্য সকল প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন। শান্তিপূর্ণ অবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগনের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে শান্তি কমিটিসমূহের প্রচেষ্টার জন্য তিনি বিশেষভাবে সন্তোষ প্রকাশ করেন । গভর্নর বলেন তিনি অবহিত আছেন যে, গত মার্চ মাসে বিভিন্ন কারাগার থেকে ক্রমাগতভাবে ছেড়ে দেয়া প্রায় ১১ হাজার দণ্ডপ্রাপ্ত বিচারাধীন ব্যক্তি কতিপয় স্থানে শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের হয়রানি করছে। তিনি বলেন তাদের খুঁজে বের করা এবং শাস্তিদানের জন্য শাসন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন । তিনি এ ব্যাপারে জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি শান্তি কমিটির সদস্যদের জানান যে এদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী এজেন্সীসমূহকে সাহায্য করার জন্য রাজাকার গঠন হচ্ছে এবং ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে । পরে জেঃ টিক্কা খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন । তাঁকে জানানো হয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সকল কর্মচারী কাজে যোগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ২রা আগষ্ট পুনরায় খোলার কথা । গভর্নর ও বিশ্ববিদ্যালযের চ্যান্সেলর পরে গাড়ীযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেন জেনারেল টিক্কা খান বিকেলে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করেন ।