পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

545 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড দৈনিক পাকিস্তান ২৯, সেপ্টেম্বর, সংহতি বিনষ্টের তৎপরতার বিরুদ্ধে সর্তক থাকুন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ডাঃ এ, এম মালিক পাকিস্তানের ঐক্য ও সংহতি ধ্বংসের প্রয়াসে লিপ্ত শত্রদের গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গভর্ণর ভবনে ঢাকার ত্রিশটি ইউনিয়ন কমিটির প্রতিনিধি ও প্রভাবশালী নাগরিকদের উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন । সভায় গভর্ণরের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী ও প্রাদেশিক মন্ত্রীগণ উপস্থিত ছিলেন । গভর্নর বলেন যে, শত্রর এজেন্টরা তাদের হীন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সমাজ জীবনকে বিপর্যস্ত ও জনগণকে বিপদগামী করার প্রয়াসে সম্ভাব্য সব রকম পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন যে, পরিস্থিতির এখন অনেক উন্নতি হলেও আত্মপ্রসাদের কোন অবকাশ নেই বরং সদা জাগ্রত থাকতে হবে । ডাঃ মালিক এই নজির বিহীন সংকটের মুখে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য সকল শ্রেনীর নাগরিকের প্রতি আবেদন জানান । তিনি দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্যে নতুন করে শপথ গ্রহণেরও আহবান জানান। তিনি বলেন যে, পাকিস্তান একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ হিসেবে টিকে থাকবে না আমরা শেষ হয়ে যাব সেইটেই আমাদের সামনে প্রশ্ন । তিনি সর্বাপেক্ষা গুরুতর এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্যে জনগণের সক্রিয় সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করেন । অতীতে আমাদের ব্যর্থতার কারণ বর্ণনা করে গভর্নর বলেন যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের নীতি শিক্ষাকে আমরা পুরোপুরি গ্রহণ করিনি। তিনি বলেন যে, আমাদের কথা, কাজ, চিন্তা ও অনুভূতির মধ্যে কখনো সামঞ্জস্য ছিল না। ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত আমরা ইতিহাসের এক নজিরবিহীন সংকটের সম্মুখীন হই। গভর্ণর বলেন যে, তার দৃঢ় বিশ্বাস, নিয়তীর প্রতি সত্যিকার বিশ্বাস ও সমস্যা সমাধানের জন্য সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমেই জাতি তার লক্ষ্য হাসিল করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি জনগনের প্রতি আদর্শকে উন্নত করার আহবান জানান। অতীতের তিক্ততা ও ভুল বুঝাবুঝি ভুলে জাতি একটি নয়া অধ্যায় শুরু করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন । গভর্ণর আইন ও শৃংখলা রক্ষা ও সর্বস্তরে কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগিতার ব্যাপারে ঢাকার নাগরিকগণকে তাদের বিশেষ দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেন । তিনি বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে নির্মুল করার জন্যে কোন ত্যাগই বিরাট বলে মনে হওয়া উচিত নয়। পরে ঢাকা শহর শান্তি কমিটির প্রেসিডেন্ট ও সাবেক এম, পি, এ জনাব সিরাজ উদ্দীন আহমদ ঢাকার নাগরিকদের পক্ষ থেকে গভর্ণরকে আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, বলেন যে, পাকিস্তান রক্ষার জন্য যে কোন পরিস্থিতির মোকাবিলা এমন কি শেষ রক্তবিন্দু বিসর্জন দিতেও তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত ।