পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

582 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড দিনের শুরুতেই এই আক্রমণ চালানো হয় । সংখ্যা অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানী সৈন্যরা সুপরিকল্পিত ও কৌশলী তৎপরতার মাধ্যমে সাফল্যজনকভাবে ভারতীয় বাহিনীর হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয় । পাকিস্তান সেনাবাহিনী শত্রর ৫৮ জন সৈনিককে হতাহত করে । আমাদের পক্ষে ১১ জন প্রাণ হারায় । ইতিমধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাওয়া খবরে প্রকাশ, ২৩ মাউন্টেন ডিভিশনের দুটি ব্রিগেড চট্টগ্রাম সেক্টরের উত্তর- পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাকিস্তানী অবস্থানগুলো আক্রমণ করে । আশংকা করা হচ্ছে যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় পূর্ব পাকিস্তানে আরো কয়েকটি ফ্রন্ট খুলবে । ইতিমধ্যে যশোর, সিলেট ও চট্টগ্রাম সেক্টর থেকে সংঘর্ষের আরো খবর এসে পৌছেছে। পাকিস্তানী সৈন্যরা গত রোবার যশোরের উত্তর-পশ্চিমে এক রেজিমেন্ট ট্যাঙ্কের সমর্থনপুষ্ট নিয়মিত ভারতীয় বাহিনীর দুটো পদাতিক ব্রিগেড শক্তির এক বড় রকমের হামলা প্রতিহত করেছে। ঢাকায় প্রাপ্ত খবরে এ কথা জানা গেছে বলে এপিপির খবরে প্রকাশ । ইউনিটগুলো প্রথম জম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলস ও ৩৫০ নম্বর পদাতিক ব্রিগেডের ৪ নম্বর শিখ লাইটের অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তানী সৈন্যরা সাফল্যের সাথে হামলাকারীদের হটিয়ে দেয়। সংঘর্ষে শত্রদের ৯০ জন নিহত ও ১৬০ জন আহত হয় । পাকিস্তানীদের পক্ষে ৪ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়। এক সংঘর্ষে শত্রদের ৭ টি ট্যাঙ্ক বিধ্বস্ত হয়। রোবারের হামলাটি ছিল পূর্ববর্তী ভারতীয় হামলাগুলোর চেয়ে বেশী মারাত্মক । সারা রাত ভারতীয় ফিল্ডগান এবং মাঝারী ও ভারী মর্টারের গোলাবর্ষণ করা হয় । ভোরের দিকে গোলাবর্ষণ থামলে সাঁজোয়া বাহিনীর সমর্থনপুষ্ট ভারতীয় সৈণ্য ও তাদের চররা পাকিস্তানী অবস্থানগুলির ওপর হামলা চালায়। পাকিস্তানী সৈন্যদের পাল্টা আক্রমণের মুখে ভারতীয় বাহিনী অগ্রসর হতে ব্যর্থ হয়। কুমিল্লা থেকে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, নিয়মিত ভারতীয় সৈন্যদের সমর্থনপুষ্ট ৪ শত ভারতীয় চর কুমিল্লা জেলার লক্ষণীপুর ফাঁড়িতে হামলা চালায় । কিন্তু সে হামলা ব্যর্থ করে দেয়া হয় এবং বিপুলসংখ্যক হতাহত হওয়ার পর অনুপ্রবেশকারীরা পালিয়ে যায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ , ও রংপুর জেলা থেকেও হামলার অনুরুপ খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু সদা জাগ্রত পাকিস্তানী সৈন্যরা এসব হামলা পর্যুদস্ত করে। অপর দিকে ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনী সীমান্তবর্তী বিভিন্ন গ্রামে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হচ্ছেঃ সিলেট আটগ্রাম, রাধানগর, জৈন্তাপুর । কুমিল্লায় কাইয়ুমপুর, মুকন্দপুর, সালদা নদী , অরগঙ্গা, মঙ্গলপুর, হরিমঙ্গল, ও বড় জালা। ময়মনসিংহে কামালপুর ও করইতলা। যশোর চৌগাছা । কুষ্টিয়া দর্শনা । রংপুরে অমরাখানা।