পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

606 পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব মাহমুদ আলী গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় এক বিবৃতিতে বলেন, প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে পরামর্শ না করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি জানিয়েছেন এবং তার আপত্তি খুবই সঠিক। বাস্তবিকই সংশ্লিষ্ট বিষয়টির গুরুত্বকে কোনক্রমেই খাটাে করে দেখা যায় না। ভারতীয় লোকসভা প্রস্তাবটি গ্রহণ করে প্রকৃতপক্ষে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার সর্বজনস্বীকৃত আন্তর্জাতিক নীতিকে পদদলিত করেছে। মিঃ করুণানিধির কণ্ঠে তাই, ক্ষুদ্র জাতিসমূহের স্বাধীনতা গ্রাস করার বৃহৎ জাতিগুলোর ফ্যাসিবাদী মতলবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ভারত যা করছে তাতে অন্যান্য এশীয় দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদী অভিসন্ধি প্রকাশ হয়ে পড়েছে। ভারতীয় পার্লামেন্টের সর্বসম্মত প্রস্তবের পর পর পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র ভারতীয় লোকদের অনুপ্রবেশ আমাদের দেশের পূর্ব অঞ্চলের লোকদের জন্য অবর্ণনীয় দুর্দশা ডেকে এনেছে। পূর্ব পাকিস্তানের বিপন্ন হয়েছে এবং অন্যান্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্যথায় তাদের উপর এ বিপদ আসতো না। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক বিকাশ ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সশস্ত্র তৎপরতাকে উৎসাহ দান এবং সাহায্য করা ছাড়াও ভারত তার রেডিওসহ সমস্ত প্রচার-মাধ্যমকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষোদগারের এবং পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থতি সম্পর্কে নির্লজ্জ মিথ্যা বানোয়াট বিদ্ধেষমূলক প্রচারণার কাজে নিয়োজিত করেছে। সশস্ত্র ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের এবং তাদের সহযোগীদের প্রতিরোধ করা এবং তাদের একটি চরম শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী মাঠে নেমেছে। আমাদের প্রতিরক্ষাবাহিনী সকল দেশপ্রেমিক মানুষের কাছ থেকে পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার দাবী রাখে। এই সমর্থন যত বেশী হবে, তত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে, দেশের এই অংশে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক তৎপরতা শুরু সহজ হবে। আমি আশা করি ও বিশ্বাস করি যে আমাদের জনসাধারণ পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করবেন এবং জাতির আহবানে সাড়া দেবেন। যেমনটি তারা ১৯৬৫ সালে ভারত ও তার সহযোগীদের সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছিলেন। দৈনিক পাকিস্তান, ৭ এপ্রিল, ১৯৭১