পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

616 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড প্রেসিডেন্ট সমস্যাটি সমাধানের উদ্দেশ্যে যাতে যুক্ত প্রচেষ্টা চালাতে পারেন সে জন্য তিনি (প্রেসিডেন্ট) ক্রমান্বয়ে ব্যাপকভাবে জনসাধারণ ও তাদের প্রতিনিধিদের সংযুক্ত করতে ইচ্ছুক হচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস, এ ধরনের জাতীয় একমাত্র জনগণই সমাধান করতে পারে। অবশ্য আমরা যদি আমাদের ব্যাপারে ঠিকঠাক করার, স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার, অতীত অবস্থা বর্জন ও নতুন করে জীবন শুরুর জন্যে সংকল্পবদ্ধ হই। পাকিস্তানকে খণ্ডিত করার চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গেছে ফরিদ আহমদের বিবৃতি এপিপি পরিবেশিত এক খবরে প্রকাশ, মৈালবী ফরিদ আহমদ গতকাল বলেছেন, পাকিস্তানকে খণ্ডিত করা এবং মুসলমানদের হিন্দু ব্রাহ্মণ্য ফ্যসীবাদের ক্রীতদাসে পরিণত করার ভারতীয় চক্রান্ত বর্তমানে নিরপেক্ষ বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কারভাবে ধরা পড়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশদ্রোহী ও পাকিস্তানীদের মধ্যে থেকে হিন্দু-ভারতের সংগৃহীত কাহিনী ব্যাপকভাবে প্রচার করছে। হিন্দু-ভারতের সঙ্গে যে বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের এজেন্টরা ষড়যন্ত্র করছে, তারাই আগ্রহভরে এই মিথ্যা সংবাদ গোপনসূত্র থেকে প্রাপ্ত বলে প্রচার করছে। তিনি বলেন, এই সব সংবাদদাতা সক্রিয়ভাবে এই কুকর্মে লিপ্ত রয়েছে। ঢাকা শহর ধ্বংস করা হয়েছে, ট্যাঙ্ক যুদ্ধ, ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও, জেনারেল টিক্কা খানের হত্যা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, চট্টগ্রাম বন্দর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত, শেখ মুজিব ও তাঁর অনুগামীগণ কর্তৃক স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠন এবং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির বিভিন্ন অংশের রণাঙ্গণে বিরাট বিজয়ের মিথ্যা সংবাদ বর্তমানে সম্পূর্ণরুপে ফাঁস হয়ে পড়েছে। মৌলবী ফরিদ আহমদ বলেন, যাঁরা এই মিথ্যাচার পরীক্ষা করেছেন, তাঁদের সীমান্ত পারের এই অসত্য প্রচারণা ঘৃণা সৃষ্টি করেছে। মৌলবী ফরিদ আহমদ বলেন, আমার দুবার চট্টগ্রাম সফর এবং বিভিন্ন শ্রেণীর লোকদের সাথে আলাপআলোচনার সুযোগ হয়েছে। ১লা মার্চ থেকে ২৯শে মার্চ পর্যন্ত সময়ে সবশ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায় করা হয়। রিপোর্ট ও আনুমানিক হিসেবে প্রায় এক কোটি টাকা বেআইনী আওয়ামী লীগ গণবাহিনীর সদস্যরা বন্দুকের মুখে আদায় করেছে। এই কাজে চট্টগ্রামের সুপরিচিত হিন্দু যুবকেরা সক্রিয়ভাবে তাদের সাহায্য করেছে। আমরা বর্বরতার এমন এক অধ্যায় প্রত্যক্ষ করেছি, যা এক শ্রেণীর পশু তাদের স্বগোত্রীয় পশুদের ওপরেও প্রয়োগ করে না। কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে মৌলবী ফরিদ আহমদ বলেন, ২৬শে মার্চ রাত্রে পাথরঘাটার কার্যরত প্রহরীদের হত্যা করা হয়। তাদের অপরাধ, তারা এমন এক শ্রেণীর মুসলমান যাকে হিন্দু ও তাদের সহযোগীরা পছন্দ করে না। এই প্রহরীদের মধ্যে একজন কোন মতে রক্ষা পায় এবং সে শপথ নিয়ে আমকে বলেছে কিভাবে ২৬শে মার্চ তাদের ওপর হত্যাকাণ্ড সাধিত হয়েছে। একইভাবে কর্ণফুলীর কাগজ কলের তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়। শেরশাহ কলোনীতি আরও ৬ জনকে হত্যা করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন অংশ থেকে একই ধরনের খবরাখবর পাওয়া গেছে।