পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

624 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড পূর্ব পাকিস্তানে বাঙ্গালীদের জীবনের নিরাপত্তা নেই- একথা ভিত্তিহীন –ডঃ সাজাদ হোসেন লণ্ডন, ৮ই জুলাই (রয়টার)- পূর্ব পাকিস্তানের শহর ও গ্রামে বাঙ্গালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই বলে যে কথা হয়েছে পূর্ব পাকিস্তানের দুইজন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক গতকাল তা অস্বীকার করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডঃ এস সাজ্জাদ হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের রিডার ডঃ এম মোহর আলী টাইম পত্রিকায় লিখিত এক দীর্ঘ চিঠিতে তাঁদের এই অস্বীকৃতির কথা জানান। বিদেশে প্রচারিত নৃশংসতার কাহিনী উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এতে বিস্মিত হবার কিছু নেই যে এ ধরনের কাহিনী প্রচার অব্যাহত থাকার ফলেই এ রকম সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে যে, পূর্ব পাকিস্তানে শহরে ও গ্রামে বাঙ্গালীদের বিশেষ করে শিক্ষিত বাঙ্গালীদের জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। বুদ্ধিজীবীদের পাইকারী হত্যা করা হয়েছে বলে যে কাহিনী প্রচারিত হয়েছে, অধ্যাপকদ্বয় তাও অস্বীকার করেছেন। চিঠিতে বলা হয় যে, মার্চের ২৫শে-২৬শে তারিখে জগন্নাথ ও ইকবাল হলের আশেপাশের এলাকায় যুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা যায়। চিঠিতে বলা হয় যে, আমাদের ৩ জন সহযোগী প্রাণ হারাতেন না যদি না তারা যে ভবনগুলোতে বাস করতেন সে গুলোকে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের তৎপরতার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতো। দৈনিক পাকিস্তান, ৯ জুলাই, ১৯৭১। প্রেসিডেন্টের পূর্ব পাকিস্তান সফরের উপর গুরুত্ব আরোপ আসগর খানের প্রদেশ সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা লাহোর, ১৬ই জুলাই (এপিপি)-তাহারিকে ইস্তেকলাল পার্টি প্রধান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল আসগর খান গত কাল এখানে বলেন যে রাজনৈতিক প্রশ্ন সমাধান পূর্ব পাকিস্তানীদের সকলের সমর্থন পেতে হলে একটি নতুন উদ্যোগও জোরালো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নয়দিন ব্যাপী পূর্ব পাকিস্তান সফর শেষে প্রত্যাবর্তনের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে এয়ার মার্শাল বলেন যে, এটা করা না হলে খুব কমসংখ্যক বাঙ্গালী আগামী উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। কারণ তাঁর মতে এখন বাঙ্গালীদের উপ-নির্বাচনের ব্যাপারে খুব উৎসাহী মনে হয় না। ইস্তেকলাল নেতা আরো বলেন যে তার উল্লেখিত ব্যবস্থার মধ্যে প্রেস সেন্সরশীপ তুলে নেয়া, রাজনৈতিক কার্যকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং অপরাধী আইন পরিষদ তালিকা প্রকাশও রয়েছে। তিনি আরো বলে যে, শীঘ্রই প্রেসিডেন্টের পূর্ব পাকিস্তান সফর সমস্যা সমাধানের পথে অনেক খানি সহায়ক হবে। কারণ পূর্ব পাকিস্তানে এখন অনেকেই প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি কামনা করছে। এক প্রশ্নের উত্তরে ইস্তেকলাল নেতা বলেন যে, তার মনে কোন সংশয় নেই যে, এরুপ ব্যবস্থা গৃহীত হলে পূর্ব পাকিস্তান উপ-নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হবে কিন্তু এ উদ্যোগ গ্রহণে বিলম্ব হলে দেশের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি কারক হবে যা ইতিপূর্বে আর কোন দিন হয়নি।