পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

649 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড এ সভা আমাদের প্রিয় দেশের সম্মান ও ঐক্য বজায় রাখার জন্য দেশ প্রেমিক জনগণকে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উদ্দেশ্যে আকুল আহবান জানাচ্ছে। -দৈনিক পুর্বদেশ, ১১ এপ্রিল, ১৯৭১ শান্তি ও জনকল্যাণ কমিটির বৈঠক গত বুধবার পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও জনকল্যাণ ষ্টিয়ারিং কমিটির প্রথম বৈঠকে ভারতীয় ও অন্যান্য প্রকাশ করা হয়েছে। এপিপির খবরে বলা হয় যে, বৈঠকে পাকিস্তানবাদ ও পাকিস্তানের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে হিন্দু ভারতের দীর্ঘ দিনের পুরানো ব্রাহ্মণ্য শক্রতার পুনরাবৃত্তির কঠোর নিন্দা করা হয়। বৈঠক পাকিস্তানকে ভেংগে দেয়ার সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের এলাকায় ভারতীয় অনুপ্রবেশেরও তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ষ্টিয়ারিং কমিটি সারা পূর্ব পাকিস্তানে কাজ করবে এবং জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সকল পর্যায়ে শান্তি ও জনকল্যাণ ইউনিট গড়ে তুলবে। শান্তি ও জনকল্যাণ ইউনিটগুলো নির্ধারিত দায়িত্ব অনুযায়ী জীবনের সর্বক্ষেত্রে আস্থা, শান্তি ও স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে। বৈঠকে গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে যেসব সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার কর্মচারীরা এখনো কাজে ফিরে অপর এক প্রস্তাবে বলা হয় যে, প্রাদেশিক ষ্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা সংস্থার সাংগঠনিক কর্মসূচী বাস্তাবায়নের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে বিভিন্ন জেলায় চলে যাবেন। এক প্রস্তাবে দেশপ্রেমিক নাগরিক, আইনজীবী, মসজিদের ঈমাম ও মাদ্রাসার মোদাররেসদের প্রতি জনসাধারণকে কোরান ও সুন্নাহর আদর্শে অনুপ্রাণিত করে তোলার আহবান জানানো হয়, যাতে জনসাধারণ ইসলাম ও পাকিস্তানের দুষমনদের মোকবিলা করতে পারেন এবং প্রয়োজন হলে জেহাদ যোগ দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকেন। ও পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও জনকল্যাণ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের ধানমন্ডি পাঁচ নম্বর রোড, ১২ নম্বর বাড়ী, ঢাকা,- সাথে যোগাযোগ করে শান্তি ও জনকল্যাণ কমিটি গঠন করার আহবান জনান। অন্য এক প্রস্তাবে শান্তি ও জনকল্যাণ কাউন্সিলের সকল ইউনিটের প্রতি জুম্মায় বৃহত্তর জামাতে সংগঠন এবং ইসলাম ও ইসলামের আবাসভূমির প্রতিরক্ষা সম্পর্কে জনসাধারণকে শিক্ষিত করে তোলার আহবান জানানো হয়েছে। বৈঠকে সভাপতির ভাষণে মৌলবী ফরিদ আহমদ সংস্থার নীতি ও আদর্শ তুলে ধরেন। তিনি বর্তমান মুহুর্তে ভ্রাতৃসূলভ মনোভাব প্রদর্শনের জন্য চীনের প্রতি পূর্ব পাকিস্তানের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নুরুজ্জামানও সংস্থার লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেন। বৈঠকে মৌলবী ফরিদ আহমেদ নেতৃত্বে বিশেষ মোনাজাত এবং পাকিস্তান ও ইসলামের খেদমতে আত্মনিবেদনের উদ্দেশ্যে শপথ গ্রহণ করা হয়। সদস্যেরা দেশের সংহতি ও অখণ্ডতা রক্ষা করার উদ্দেশ্যে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন।