বাচক শব্দ কেবলমাত্র সমাসে খাটে, যেমন: একজন দশঘর দুইমুখো তিনহপ্তা। কিন্তু বিশেষ্য পদের সঙ্গে জোড়া না লাগিয়ে ব্যবহার করতে গেলেই ওদের সঙ্গে ‘টি’ বা ‘টা’, ‘খানা’ বা ‘খানি’ যোগ করা যায়, এর অন্যথা হয় না। কখনো কখনো বা বিশেষ অর্থে ই প্রত্যয় জোড়া হয়, যেমন: একই লোক, দুইই বোকা। কিন্তু এই প্রত্যয় আর বেশি দরে চালাতে গেলে ‘জন’ শব্দের সহায়তা দরকার হয়, যেমন: পাঁচজনই দশজনেই। ‘জন’ ছাড়া অন্য বিশেষ্য চলে না; পাঁচ গোরুই ‘দশ চৌকিই’ অবৈধ, ওদের ব্যবহার করা দরকার হলে সংখ্যাশব্দের পরে টি টা খানি খানা জুড়তে হবে, যথা: দশটা গোরুই, পাঁচখানি তক্তাই। এক দুই -এর বর্গ ছাড়া আরও দুটি দুই অক্ষরের সংখ্যাবাচক শব্দ আছে, যেমন: আধ এবং দেড়। কিন্তু এরাও বিশেষ্যশব্দসহযোগে সমাসে চলে, যেমন: আধমোন দেড়পোয়া। সমাস ছাড়া বিশেষণ রুপ: দেড়া আধা। সমাসসংশ্লিষ্ট একটা শব্দের দৃষ্টান্ত দেখাই: জোড়হাত। সমাস ছাড়ালে হবে ‘জোড়া হাত।’ ‘হেঁট’ বিশেষণ শব্দটি ক্রিয়াপদের যোগে অথবা সমাসে চলে: হেঁটমণ্ডু, কিংবা হেঁট করা, হেঁট হওয়া। সাধারণ বিশেষণ অর্থে ওকে ব্যবহার করি নে, বলি নে ‘হেঁট মানুষ’। বস্তুত ‘হেঁট হওয়া’ ‘হেট করা জোড়া ক্রিয়াপদ, জড়ে লেখাই উচিত। মাঝ’ শব্দটাও এই জাতের, বলি: মাঝখানে মাঝদরিয়া। এ হল সমাস। আর বলি: মাঝ থেকে। এখানে ‘থেকে’ অপাদানের চিহ্ন, অতএব ‘মাঝথেকে’ শব্দটা জোড়া শব্দ। বলি নে: মাঝ গোর, মাঝ ঘর। এই মাঝ শব্দটা খাঁটি বিশেষণ রূপ নিলে হয় ‘মেঝো’।
দুই অক্ষরের হসন্ত বাংলা বিশেষণের দৃষ্টান্ত ভেবে ভেবে আরও কিছু মনে আনা যেতে পারে, কিন্তু অনেকটা ভাবতে হয়। অপর পক্ষে বেশি খুঁজতে হয় না, যেমন: বড়ো ছোটো মেঝো সেজো ভালো কালো ধলো রাঙা সাদা ফিকে খাটো রোগা মোটা কুঁজো বাঁকা সিধে কানা খোঁড়া বোঁচা নলো ন্যাকা খাঁদা ট্যারা কটা গোটা ন্যাড়া খ্যাপা