পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূর্ব ভারত রেলপথে ゲ○ বৰ্দ্ধমান শহর হইতে দুই মাইল দূরে নবাবহাট নামক স্থানে রাজবংশের প্রতিষ্ঠিত ১০৮টি শিবমন্দির আছে। এই মন্দিরগুলির নিকটেই তালিতগড় বা তেলিয়াগড়ির দুর্গ অবস্থিত। তালিত রেল স্টেশনে নামিয়া এই দুর্গটি ও শিবমন্দিরগুলি দেখিতে পাওয়া যায়। বগীর হাঙ্গামার সময় বৰ্দ্ধমান রাজপরিবার তালিতগড়ের দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করিতেন। পূবেৰ্ব বৰ্দ্ধমান স্বাস্থ্যকর স্থান ছিল। ইংরেজ শাসনের প্রথম যুগেও এ অঞ্চল কৃষি সম্পদে ভারতের শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করিত এবং বৰ্দ্ধমানকে “বাংলার বাগিচা’ বলা হইত। কিন্তু ১৮৬২ খৃষ্টাব্দ হইতে “বৰ্দ্ধমান জর ” নামে পরিচিত এক প্রকার ম্যালেরিয়া জরের জন্য ইহা ক্রমশঃ অস্বাস্থ্যকর হইয়া পড়িয়াছে। অবশ্য শহরের স্বাস্থ্য বৰ্ত্তমানে অপেক্ষাকৃত উন্নত হইয়াছে। বৰ্দ্ধমানে মহারাজাধিরাজ বাহাদুর কর্তৃক স্থাপিত একটি প্রথম শ্রেণীর কলেজ, জেলাবোর্ড পরিচালিত একটি টেকৃনিক্যালু স্কুল ও গবর্ণমেণ্ট পরিচালিত একটি মেডিক্যাল স্কুল আছে। এখানকার সীতাভোগ, মিহিদানা, খাজা ও ওলা নামক মিষ্টান বিশেষ বিখ্যাত। বৰ্দ্ধমান মিউনিসিপ্যালিটির অস্তগত কাঞ্চননগর ছুরি ও কাচি প্রভৃতির জন্য প্রসিদ্ধ। কেহ কেহ অনুমান করেন যে বঙ্গরাজ শশাঙ্কদেব কিছুকাল এখানে অবস্থান করিয়াছিলেন। কাঞ্চননগরের নিকটে দামোদর নদের পশ্চিমতীরে রাঙ্গামাটি নামক গ্রাম হইতে ছয় মাইল পশ্চিমে শশাঙ্ক নামে একটি গ্রাম আছে। নিকটেই পুরাতন দামোদর খাতের উত্তরে গেীরনদের তীরে আর একটি শশাঙ্ক গ্রাম আছে। এই জন্য অনেকে মনে করেন যে এই অঞ্চলে শশাঙ্কদেবের বংশধরগণ বহুকাল রাজত্ব করিয়াছিলেন। বৰ্দ্ধমান হইতে একটি ছোট মাপের লাইন এই জেলার কাটোয়া মহকুমা হইয়া বীরভূম জেলার অন্তর্গত আহ্মদপুর পর্য্যন্ত গিয়াছে। খান জংশন—হাওড়া হইতে ৭৬ মাইল দূর। ইহা একটি সমৃদ্ধ গ্রাম। এই স্থান হইতে সাহেবগঞ্জ লুপ লাইন বাহির হইয়াছে। মানকর—হাওড়া হইতে ৯০ মাইল। এই স্থানটি রেশমের কারখানার জন্য বিখ্যাত। এখানে খৃষ্ঠান মিশনারীগণ কর্তৃক স্থাপিত একটি দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল আছে। মানকরের কদমা, ওলা, খাজা প্রভূতি মিষ্টান্ন প্রসিদ্ধ। মানকর স্টেশন হইতে এক মাইল উত্তরে অমরারগড় নামক স্থানে প্রাচীন কীত্তির ধবংসাবশেষ দেখা যায়। প্রবাদ এই স্থানে গোপড়মের সদ্বগোপ বংশীয় রাজা মহেন্দ্রের রাজধানী ছিল। ইহার সুরক্ষিত গড়ের চিহ্ন এখনও দৃষ্ট হয়। অনেকের মতে নব্য ন্যায়ের প্রবর্তৃক প্রসিদ্ধ পণ্ডিত রঘুনাথ শিরোমণি মানকরে জন্মগ্রহণ করছিলেন। অতি শৈশবেই ইহার পিতৃবিয়োগ হয়। রঘুনাথ জন্মাবধি একচক্ষু ছিলেন। দৰিদ্ৰ জননী উহার একচক্ষু অসাধারণ বুদ্ধিমান সস্তানকে বিদ্যাশিক্ষা দিবার আশায় নবদ্বীপে গমন করেন। বালকের অসামান্য বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাইয়া পণ্ডিত প্রবর বাসুদেব সাবর্বভৌম মাতাপুত্রের ভর গ্রহণ করেন। অল্পকালের মধ্যেই বাস্থদেৰ সাবর্বভোমের নিকট শিক্ষা সমাপন করিয়া রঘুনাথ